শুক্রবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সভাপতি পদ থেকে বাদ দেওয়ায় সংসদে এমপিদের ক্ষোভ

ডিগ্রি কলেজ গভর্নিং বডি

নিজস্ব প্রতিবেদক

সভাপতি পদ থেকে বাদ দেওয়ায় সংসদে এমপিদের ক্ষোভ

উচ্চ আদালতের রায়ের দোহাই দিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ ডিগ্রি কলেজগুলোতে গভর্নিং বডির সভাপতি পদ থেকে সংসদ সদস্যদের বাদ দেওয়াকে এমপিদের জন্য অসম্মানজনক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি ও জাতীয় পার্টির এমপিরা। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে করোনাকালীন সংসদের নবম অধিবেশনের হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বিল পাস হওয়ার আগে বিলটির ওপর জনমত যাচাই-বাছাই করার প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে তারা এ মন্তব্য করেন। অধিবেশনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির এমপি পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ। তিনি বলেন, আদালতের একটি রায়ে ডিগ্রি কলেজে সংসদ সদস্যদের সভাপতির দায়িত্ব থেকে বাদ দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে এবং উচ্চ আদালতে আপিলের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রজ্ঞাপন দিয়েছে। এর আগে একটি মামলাকে কেন্দ্র করে এইচএসসি লেভেলের গভর্নিং বোর্ডের সভাপতির পদ থেকে সংসদ সদস্যদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাই শিক্ষামন্ত্রী এবং আইনমন্ত্রীকে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। যা হয়েছে তা অনেকাংশেই সংসদ সদস্যদের অসম্মানজনক অবস্থায় নিয়ে গেছে।  বিএনপির এমপি হারুনুর রশীদ বলেন, সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য কাঠামো তৈরি করেছেন, সেখানে দুজন অভিভাবক নির্বাচিত করার সুযোগ আছে। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং ডিগ্রি পর্যায়ে এটার কোনো নিয়ন্ত্র নেই। এই ক্ষেত্রে অতিদ্রুত একটি ব্যবস্থা করা দরকার। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির জন্য সরকারের অর্জন ম্লান হয়ে যাচ্ছে : সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম, দুর্নীতির কথা প্রতিদিন খবরে আসছে, আলোচিত হচ্ছে। কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কি না জনগণ জানছে না। দুর্নীতির জন্য সরকারের অর্জন ম্লান হয়ে যাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রী ব্যবস্থা নেবেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের প্রকোপ এখনো দেশে বিদ্যমান। কবে এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে, সে নিশ্চয়তা দিতে পারছে না কেউ। এই অবস্থায় কভিড হাসপাতালকে নন-কভিডে রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত রোগী, বিশেষ করে সাধারণ মানুষকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দেবে।’

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে করোনাকালীন সংসদের নবম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- বন্ধ হচ্ছে না : আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যার’ অভিযোগ তুলে জি এম কাদের বলেন, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- বন্ধ করা যাচ্ছে না। এটা বন্ধ করা সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, প্রায়ই কোথাও না কোথাও গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে থাকছে। অনেক ক্ষেত্রে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়ার পরও লাশ পাওয়া যাচ্ছে। ভুক্তভোগী পরিবার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যের মধ্যে গরমিল দেখা যাচ্ছে।’ বাংলাদেশে আইনের লোকের বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ে জড়ানোর ইতিহাস তুলে ধরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে একটি বাহিনী ‘যৌথ বাহিনী, বিএনপি আমলে সৃষ্টি করা হয়েছিল। পরে আইন করে র‌্যাব গঠন করা হয়েছিল। তারা এই কাজ করত। কিন্তু পরেও সেই ধারা বজায় রাখা হয়।’ জি এম কাদের বলেন, ‘ক্রমান্বয়ে অনেক সরকারি বাহিনী দ্বারা নির্দোষ লোককে হত্যা করা হচ্ছে। ব্যক্তিস্বার্থে ভাড়াটিয়া বাহিনী হিসেবে হত্যাকা-ের অভিযোগ আসছে, মামলায় প্রমাণ হচ্ছে। এখন মাদকবিরোধী অভিযান, চরমপন্থিদের দমন, সন্ত্রাসী দমন, ধর্মীয় উগ্রপন্থি দমনের নামে পরিচালিত কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যা সংঘটিত হয়। এখন রাজনৈতিক কর্মী, বিভিন্ন পেশার কর্মজীবীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রোষের শিকার হয়ে বন্দুকযুদ্ধ, গুমের ভিকটিম হচ্ছে। এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।’ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘এসব ঘটনায় সরকারের তরফ থেকে অনেক সময় বলা হয়, কোনো বাহিনী বিচারবহির্ভূত হত্যায় ‘জড়িত নয়’। কিন্তু তারা দায় এড়াতে পারে না। অপরাধীকে খুঁজে বের করার দায়িত্ব তাদের। বেআইনি কাজ বন্ধ করতে প্রয়োজন আইনি ব্যবস্থা। বেআইনি কাজ বেআইনিভাবে প্রতিরোধ ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। এ ধরনের ব্যবস্থা সংবলিত সমাজ সভ্য সমাজ কি না সেটা বিবেচনা করা দরকার।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর