শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

বরিশাল-ঢাকা নৌপথের ‘কাঁটা’ সরছে

মিয়ারচর চ্যানেল পরিহারের উদ্যোগ

রাহাত খান, বরিশাল

বরিশাল-ঢাকা নৌপথের ‘কাঁটা’ সরছে

ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথের গলার কাঁটা মেঘনার ‘মিয়ারচর চ্যানেল -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ঢাকা-বরিশাল নৌ-রুটকে বলা হয় নৌপথের প্রাণ। ৭৭ নটিক্যাল মাইল বা ১৪২ কিলোমিটার এই নৌপথের মেঘনার মিয়ারচর চ্যানেল ব্যবহার করলে তুলনামূলক কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছা যায়। প্রতি বছর বিপুল অর্থ খরচে ড্রেজিং করেও চ্যানেলটির ন্যাব্য রক্ষা করা যায় না অস্বাভাবিক পলি পড়ার কারণে। নাব্য না থাকায় ঢাকা এবং বরিশালমুখী যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌযানগুলোকে জোয়ারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। অনেক সময় ঘটে দুর্ঘটনাও। এসব প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এবার টেকসই নৌপথের পরিকল্পনা করেছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়। মিয়ারচর চ্যানেল পরিহার করে ভিন্নতর দুটি চ্যানেল দিয়ে নৌ চলাচলের উদ্যোগ নিয়েছে তারা। এর মধ্যে একটি চ্যানেল দিয়ে শুধু যাত্রীবাহী এবং আরেকটি চ্যানেল দিয়ে পণ্যবাহী নৌযান চলাচলের পরিকল্পনা রয়েছে। সে অনুযায়ী চলছে হাইড্রোগ্রাফিক সমীক্ষা। প্রস্তাবিত নতুন দুটি নৌপথের বর্তমান পরিস্থিতি দেখতে আজ শনিবার নৌপথে চাঁদপুর থেকে হিজলা হয়ে মেহেন্দীগঞ্জের উলানিয়া-কালীগঞ্জ আসছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি। সূত্র জানায়, ঢাকা-বরিশাল রুটের বড় বড় নৌযান ঢাকা-চাঁদপুর-মিয়ারচর (মেঘনা) চ্যানেল হয়ে চলাচল করে। কিন্তু মিয়ারচর চ্যানেলে ভাটার সময় পানির গভীরতা থাকে সর্বোচ্চ ৬ থেকে ৭ ফুট। এখন ১০ থেকে ১১ ফুট ড্রাফটের বড় বড় যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌযানগুলো মিয়ারচর চ্যানেল দিয়ে চলাচল করতে পারে না। প্রায়ই চ্যানেলে পূর্ণাঙ্গ জোয়ারের জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হয়। অনেক সময় ঝুঁকি নিয়ে চলতে গিয়ে ঘটে দুর্ঘটনা। বরিশাল-ঢাকা নৌপথের মিয়ারচর চ্যানেলে বছরজুড়ে থাকে নাব্য সংকট। প্রতি বছর শত শত কোটি টাকা ব্যয়ে ড্রেজিং করে এই নৌপথের নাব্য ধরে   রাখার চেষ্টা করে সরকার। কিন্তু উজান থেকে নেমে আসা পলি অস্বাভাবিকভাবে জমতে থাকায় চ্যানেলের বিভিন্ন পয়েন্টে ডুবোচরের সৃষ্টি হয়। এতে প্রতি বছর ড্রেজিং করেও মিয়ারচর চ্যানেলের নাব্য রক্ষা করা সম্ভব হয় না। এ অবস্থায় মিয়ারচর চ্যানেল পরিহার করে টেকসই নৌপথের লক্ষ্যে হাইড্রোগ্রাফিক সমীক্ষা শুরু করেছে মন্ত্রণালয়।  প্রস্তাবিত দুটি নৌপথের মধ্যে ‘বরিশাল-হিজলা-মৌলভীরহাট-শৌলা বদরটুনী-ছয় নম্বর-হরিনা আলুবাজার (চাঁদপুর) হয়ে ঢাকার’ দূরত্ব ৭৯ নটিক্যাল মাইল বা ১৪৬ কিলোমিটার। এই পথে যাত্রীবাহী জাহাজগুলোর গন্তব্যে যেতে সময় লাগবে ৯ ঘণ্টা। প্রস্তাবিত অপর নৌপথ ‘বরিশাল-উলানিয়া-কালীগঞ্জ-চাঁদপুর-ঢাকার’ দূরত্ব ৯৮ নটিক্যাল মাইল বা ১৮১ কিলোমিটার। এই পথে যাত্রীবাহী জাহাজের গন্তব্যে যেতে সময় লাগবে ১০ ঘণ্টা। দুটি নৌপথের মধ্যে ‘বরিশাল-হিজলা-মৌলভীরহাট-শৌলা বদরটুনী-ছয় নম্বর-হরিনা আলুবাজার (চাঁদপুর)-ঢাকা’ রুটে শুধু যাত্রীবাহী জাহাজ এবং ‘বরিশাল-উলানিয়া-কালীগঞ্জ-চাঁদপুর-ঢাকা’ রুটে শুধু পণ্যবাহী নৌযান চলাচলের পরিকল্পনা রয়েছে।  বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা জানান, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নৌপথে যত দুর্ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহি জাহাজের সংঘর্ষ হয়েছে বেশি। তাই যাত্রী ও পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের জন্য আলাদা আলাদা নৌপথ করার উদ্যোগ।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর