সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
দূষণের কবলে চট্টগ্রামের পরিবেশ

অভিযান হয় মামলা হয় সমানে দূষণও হয়

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে পাহাড় কাটা, কেমিক্যাল বর্জ্য ফেলা, পলিথিন ব্যবহার করে পরিবেশ দূষণ করা, শব্দ দূষণ, শিল্প-কারখানার অপরিশোধিত পানির মাধ্যমে খাল-নদী দূষণসহ নানাভাবে পরিবেশ দূষণ অব্যাহত আছে। একই সঙ্গে পরিবেশ আইন না মানায় এসব অপরাধে পরিবেশ অধিদফতরের অভিযান, জরিমানা ও মামলাও হচ্ছে। কিন্তু পরিবেশ দূষণকারীদের অপকর্ম থামছেই না। তারা বেপরোয়া মনোভাবে ক্রমশ পরিবেশ দূষণ করেই চলছে। পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম মহানগর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত মামলা হয় ৫০টি, এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয় ২৪টি, জরিমানা করা হয় ২ কোটি ৭৮ লাখ ৯৫ হাজার ২৪০ টাকা, এর মধ্যে আদায় হয় ৫০ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মামলা হয় ১১৫টি, নিষ্পত্তি হয় ৯৮টি। জরিমানা করা হয় ৫ কোটি ৩৫ লাখ ৮৬ হাজার ৫১৪ টাকা, এর মধ্যে আদায় হয় এক কোটি ৪২ লাখ ৮২ হাজার ১৫৪ টাকা। অভিযোগ আছে, পরিবেশ অধিদফতর পরিবেশ দূষণে স্থানীয়ভাবে মামলা করে। কিন্তু অনেক প্রভাবশালী সময়ক্ষেপণ করতে সচিবালয়ে মামলার আপিল করে থাকেন। মন্ত্রণালয়ে আপিলের কারণে ঝুলে যায় অনেক মামলার জরিমানা আদায়। বছরের পর বছর ধরে অনিষ্পন্ন থেকে যায়।

গত পাঁচ বছরে এ ধরনের ৭০টির অধিক মামলায় ঝুলে গেছে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ আদায়। আবার আদেশের ৭ দিনের মধ্যে জরিমানার অর্থ পরিশোধের নিয়মও অনেক ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না। আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে পরিবেশ দূষণ কার্যক্রম। 

পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক নূরুল্লাহ নূরী বলেন, ‘আমরা নিয়মিতই অভিযান পরিচালনা করে থাকি। কিন্তু অনেকেই জরিমানা দেওয়ার পর আবারও পরিবেশ দূষণ করে থাকেন। তাদের পুনরায় জরিমানা ও মামলা দেওয়া হয়।’

২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মামলা হয় ১০৫টি, এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয় ১০২টি, জরিমানা করা হয় ৭৪ লাখ ৩৯ হাজার ৯২৫ টাকা, আদায় করা হয় ৬৯ লাখ ৮২ হাজার ১৭৫ টাকা। ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মামলা হয় ৯৬টি, এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয় ৮৯টি, জরিমানা করা হয় ৭১ লাখ ৪২ হাজার ৮৭১ টাকা, আদায় হয় ৬৩ লাখ ৭ হাজার ৫৩৯ টাকা। ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মামলা হয় ১১০টি, এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয় ১০৩টি, জরিমানা করা হয় ৯৭ লাখ ৬ হাজার ৭৯০ টাকা, আদায় হয় ৮৯ লাখ ৪৬ হাজার ২৩০ টাকা।

সর্বশেষ খবর