সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

সম্ভাবনার মধ্যেই সংকট

ঝুঁকিতে ৮ জেলার মানুষের চিকিৎসাসেবা

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভালো একটি উদ্যোগ নিতে যাচ্ছিল বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে ৫০ বেডের ডায়ালাইসিস ইউনিট চালু করা গেল না। চিকিৎসক, জনবল, পরিবহন, রোগীর স্বজনদের ওয়েটিং রুমসহ নানা সংকট আর সম্ভাবনা নিয়ে আট জেলার মানুষের চিকিৎসাসেবার শেষ ভরসা এই হাসপাতাল। দ্রুত সেবা দিতে হাসপাতালে চালু রয়েছে এনজিওগ্রাম, অ্যান্ডোসকপি, কিডনি ডায়ালাইসিস, রেডিওথেরাপিসহ প্রায় সব চিকিৎসাসেবা। রোগীর চাপ থাকায় ৫০০ বেড থেকে ১২০০ বেডের অনুমতি পেয়ে সে লক্ষ্যেই এখন কাজ চলছে হাসপাতালের। শজিমেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৯৯৮ সালে ২৫০ শয্যার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের প্রথম কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নতুন করে অবকাঠামো নির্মাণের পর ২০০৬ সালে ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শহরের ছিলিমপুরে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকেই রোগীর চাপ বেড়েছে। প্রায় সব ধরনের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার কারণে এই হাসপাতালে রোগী ভর্তি হতো দ্বিগুণ। এ নিয়ে চিঠি চালাচালির পর ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয় ব্যয় ব্যবস্থাপনা অধিশাখা এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ১২০০ শয্যায় উন্নীত করার আদেশ জারি করে। ইতিমধ্যে হাসপাতালের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ৫০০ শয্যার হাসপাতাল হলেও করোনাভাইরাস আতঙ্কের আগে রোগী ভর্তি থাকত প্রতিদিন ১৩০০ থেকে ১৪০০ জন।  রোগীরা বেড না পেয়ে হাসপাতালের মেঝেতে অবস্থান করে চিকিৎসাসেবা নিত।

ফলে ৫০০ শয্যার জনবল নিয়ে ১৪০০ রোগীকে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হতো এই হাসপাতালের চিকিৎসকসহ সব জনবলকে। এই হাসপাতালে নতুন করে ৫০ বেডের কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিট খোলা হচ্ছে। বর্তমানে ১২টি মেশিন দিয়ে দুই শিফটে মাত্র ৪০০ টাকায় কিডনি ডায়ালাইসিস করা হচ্ছে। শজিমেক হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ৫০০ বেডের এই হাসপাতালে ২৩৭টি পদই শূন্য।

বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আবদুল ওয়াদুদ জানান, এখানে চিকিৎসকের ১৯৪ জনের মধ্যে রয়েছেন ১৩৯ জন। এভাবে সব কর্মচারী পদে প্রয়োজনীয় জনবল নেই। জনবল সংকট নিয়েই দ্বিগুণ রোগীর চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। ১২০০ বেডের অনুমোদন পাওয়া গেলেও জনবল অনুমোদন পাওয়া যায়নি। বগুড়ার আশপাশের জয়পুরহাট, দিনাজপুরের হিলি, ঘোড়াঘাট, গাইবান্ধা, নওগাঁ, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর (যমুনা নদী পার হয়ে আসে) সহ রংপুর জেলার কয়েকটি উপজেলার রোগীও এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর