রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের চূড়ান্ত পাওনা পরিশোধে গোল্ডেন হ্যান্ডশেক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গতকাল ঢাকার ডেমরায় রাষ্ট্রায়ত্ত করিম জুট মিলে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি) আয়োজিত বন্ধ ঘোষিত মিলগুলোর অবসরপ্রাপ্ত ও অবসানকৃত (গোল্ডেন হ্যান্ডশেক সুবিধাসহ) শ্রমিকদের চূড়ান্ত পাওনা পরিশোধে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ৩০ জন পাটকল শ্রমিকের মাঝে তাদের অর্ধেক পাওনা বাবদ চেক দেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে বলা হয়- বিজেএমসির নিয়ন্ত্রণাধীন ২৫টি চালু পাটকলে কর্মরত সব স্থায়ী শ্রমিকের গ্র্যাচুইটি, পিএফ ও ছুটি নগদায়নসহ গোল্ডেন হ্যান্ডশেক সুবিধার মাধ্যমে চাকরি অবসায়নপূর্বক উৎপাদন কার্যক্রম গত ১ জুলাই বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
ওই ২৫টি পাটকলের ২৪ হাজার ৬০৯ জন স্থায়ী শ্রমিকের পাওনা বাবদ প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা, ২০১৩ সালের পর হতে অবসরপ্রাপ্ত ১০ হাজার ১০৭ জন শ্রমিকের গ্র্যাচুইটি, পিএফ ও ছুটি নগদায়ন পাওনা ১ হাজার কোটি টাকাসহ মোট প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা পর্যায়ক্রমে তিন অর্থবছরে পরিশোধের প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রমিকদের আর্থিক দুরবস্থা বিবেচনা করে সব পাওনা চলতি অর্থবছরে এককালীন পরিশোধের নির্দেশনা দেন। এ ছাড়া শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ আর্থিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষার স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেকের পাওনার ৫০ শতাংশ নগদে ও বাকি ৫০ শতাংশ তিন মাস অন্তর অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র আকারে পরিশোধ করার নির্দেশনাও দিয়েছেন।
শ্রম আইন অনুযায়ী ৬০ দিনের নোটিসের পরিবর্তে কাজ করা ছাড়াই শ্রমিকদের এ বছরের জুলাই ও আগস্ট মাসের মজুরি ইতিমধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী শ্রমিকদের শতভাগ পাওনা এককালীন পরিশোধের লক্ষ্যে যাবতীয় পাওনাদির হিসাব নিরীক্ষাপূর্বক চূড়ান্ত করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অর্থ বিভাগ প্রয়োজনীয় নিরীক্ষা শেষে করিম জুট মিলের পূর্বে অবসর গ্রহণকারী ও সম্প্রতি অবসানকৃত শ্রমিকদের যাবতীয় পাওনা বাবদ প্রয়োজনীয় অর্থ ছাড় করেছে। তা হতে মঙ্গলবার ওই মিলের সব শ্রমিকের পাওনার ৫০ শতাংশ নগদে পরিশোধ করা হচ্ছে। বাকি ৫০ শতাংশ সঞ্চয়পত্র আকারে পরিশোধের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গতকাল ৩০ জন শ্রমিকের হাতে সঞ্চয়পত্র তুলে দেওয়ার মাধ্যমে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ প্রক্রিয়া শুরু হলো। করিম জুট মিলের অবসানকৃত ১ হাজার ৭৫৯ জন শ্রমিকের পাওনা ১৯২ কোটি টাকা, অবসরপ্রাপ্ত ৬১২ জন শ্রমিকের বকেয়া পাওনা ৩৪.৩৭ কোটি টাকা, বদলি ২৬২৫ জন শ্রমিকের পাওনা ২৫.২১ কোটি টাকাসহ মোট ২৫১.৫৮ কোটি টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে।