সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ

১০ মাসেও হয়নি পূর্ণাঙ্গ কমিটি পদ পাচ্ছেন মাদক ব্যবসায়ীরা

রাহাত খান, বরিশাল

বিগত ১০ মাসেও কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়নি বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের। গত ৮ ডিসেম্বর সম্মেলনে সভাপতি ও সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর ১০ মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেননি নেতারা। এ জন্য করোনার দোহাই দিচ্ছেন তারা। তবে শিগগিরই ৭৬ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি পূর্ণাঙ্গ করে অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রে পাঠানোর কথা বলেছেন নেতারা। এ ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য দল থেকে আসা কাউকে কমিটিতে স্থান দেবেন না বর্তমান নেতৃত্ব। আওয়ামী পরিবারের বাইরের কেউ মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির সদস্যও হতে পারবেন না। ত্যাগী ও নিবেদিত কর্মীদের দিয়ে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার কথা বলা হলেও স্থান পাচ্ছেন বিতর্কিত ও মাদকে সম্পৃক্তরা। গত বছরের ৮ ডিসেম্বর মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে অ্যাডভোকেট এ কে এম জাহাঙ্গীরকে সভাপতি এবং সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক কমিটির নেতারা জানান, টানা ১২ বছর ক্ষমতায় থাকায় আওয়ামী লীগে সুবিধাভোগী ও হাইব্রিডের সংখ্যা বেড়েছে। জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য দল থেকে আসা অনেকেই পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান পেতে মরিয়া। তাদের অনেকেই পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান পেতে চেষ্টা করছেন। আবার দির্ঘদিন দলে কোণঠাসা ত্যাগী নেতারাও নতুন কমিটিতে স্থান পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। পিছিয়ে নেই বিতর্কিত ও মাদকে সম্পৃক্তরাও।  মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতা জানান, করোনার কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন পিছিয়েছে। কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক একাধিকবার একান্তে বৈঠক করেছেন। সেখানে পূর্ণাঙ্গ কমিটির একটি খসড়া করা হয়েছে। এই খসড়া বরিশাল আওয়ামী লীগের অভিভাবকখ্যাত জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর কাছে দেওয়া হবে। সেখান থেকে বিচার করে কাউকে কর্তন কিংবা নতুন করে কাউকে অন্তর্ভুক্ত, আবার কারোর পদপদবি সামঞ্জস্যপূর্ণ করবেন তিনি। অভিভাবকের সবুজ সংকেত পেলেই খসড়া চূড়ান্ত করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের জন্য পাঠানোর কথা জানিয়েছেন নেতারা। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, খসড়া কমিটিতে কিছু ভুলত্রুটি থাকলেও আওয়ামী পরিবার বিবেচনায় দু-একজনকে আরেকবার সুযোগ দেওয়ার পক্ষে নীতিনির্ধারকরা। এ নিয়ে মধ্যম সারির নেতাদের ক্ষোভ-আপত্তি থাকলেও নীতিনির্ধারকদের ওপর কথা বলার জো নেই তাদের।

তবে নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ‘ত্যাগী ও নিবেদিতরা’ মূল্যায়িত হবেন বলে জানিয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে এম জাহাঙ্গীর।

তিনি বলেন, করোনার কারণে পিছিয়েছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন প্রক্রিয়া। তবে সম্প্রতি তিনি আর সাধারণ সম্পাদক বসে একটা খসড়া পূর্ণাঙ্গ কমিটি দাঁড় করিয়েছেন। অভিভাবক আবুল হাসান আবদুল্লাহ খসড়া দেখে সবুজ সংকেত দিলেই অনুমোদনের জন্য পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রে পাঠানো হবে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিক আবদুল্লাহর মোবাইলে কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

তবে অ্যাডভোকেট এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, আগের কমিটির অনেকেই নতুন কমিটিতে রদবদল করা হচ্ছে। দলছুট কিংবা হাইব্রিডদের নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান দেওয়া হবে না। এমনকি সদস্য পদেও নয়। আওয়ামী পরিবারের বাইরের কেউ এই কমিটিতে থাকতে পারবে না। বিতর্কিত অনেককে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী পরিবারের যারা প্রশ্নবিদ্ধ কার্যক্রম করে- তাদের আরেকবার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এরপরও তারা সংশোধন না হলে সাংগঠনিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি।

অনুমোদন হলে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আগামী তিন বছর মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেবেন নতুন কমিটির নেতারা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর