নদ-নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। ফলে নদ-নদী অববাহিকার বন্যা ও ভাঙনকবলিত মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, কুড়িগ্রামে সব নদ-নদীর পানি কমছে। বর্তমানে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। চতুর্থ দফা বন্যায় গত এক সপ্তাহে জেলার প্রায় ৪ হাজার ৬১৯ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। এর মধ্যে বেশি নিমজ্জিত আমন ধান ১ হাজার ৮৪০ হেক্টর। এ ছাড়া শাকসবজিসহ অন্যান্য ফসলের প্রায় ৪৫০ হেক্টর জমি বন্যায় নিমজ্জিত। ধরলা ও দুধকুমোর নদের ২০টি পয়েন্টে ভাঙন চলছে বলে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে। ফলে এসব এলাকার মানুষ আতঙ্কে দিন পার করছে। গত এক সপ্তাহে সদরের সারডোবে ও যাত্রাপুরে ২ শতাধিক বসতভিটা, দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া তিস্তার তীব্র ভাঙনে উলিপুর উপজেলার চরবজরার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি পাকা রাস্তা ও শতাধিক বাড়িঘর ইতোমধ্যে নদীগর্ভে চলে গেছে। লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, বন্যায় আবাদি জমি ও বসতভিটা হারিয়ে অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। আগামী দিনগুলোয় কীভাবে সংসার চলবে তারও কোনো উপায় নেই। সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের মধুরাম গ্রামের তিস্তাপাড়ের কৃষক অনিল বর্মণ (৬৪) বলেন, ‘এক সপ্তাহের মধ্যে আমার ৩ বিঘা জমি আর বসতভিটা তিস্তায় বিলীন হয়ে গেছে। জমিতে কষ্ট করে ধান লাগিয়েছিলাম। এখন জমিও নেই, বসতভিটাও নেই।
পরিবার নিয়ে উঠেছি সরকারি রাস্তায়। জীবনে আর কোনো দিন আবাদি জমি ও বসতভিটা করতে পারব না। এখন ভূমিহীন মানুষের তালিকায় নিজের নাম লেখাতে হবে।’
মহিষখোঁচার বালাপাড়া এলাকার লাকি বেগম বলেন, ‘হামার তো আর টাকা-পইসা নাই যে হামরা নাও ভাড়া করি ঘর ভাঙি নিয়া যামো। জীবনের মায়া ছাড়ি স্বামী, ছওয়া-পোয়া নিয়া নদীর পাড়ত থাইকবার নাগছি।’