বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

চিকিৎসাবর্জ্য শোধনাগার ছাড়াই চলছে হাসপাতাল-ক্লিনিক

ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে চট্টগ্রামের পরিবেশ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম মহানগরে হাসপাতাল-ক্লিনিক আছে ৫২টি। এর মধ্যে চিকিৎসা ও তরলবর্জ্য শোধনাগার আছে মাত্র তিনটির। বাকি ৪৯টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের  কোনো বর্জ্য শোধনাগার নেই। ফলে এ সব হাসপাতাল-ক্লিনিকের বর্জ্যগুলো প্রয়োজনীয় পরিশোধন ছাড়া অপসারণ করা হচ্ছে। তবে পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম মহানগর এসব হাসপাতাল-ক্লিনিককে আগামী ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রয়োজনীয় তরলবর্জ্য পরিশোধনাগার-ইটিপি, ডব্লিউটিপি বা এসটিপি স্থাপনের নির্দেশ দিয়ে চিঠি দিয়েছে। অন্যথায় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর আগে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর, সিভিল সার্জন এবং পরিবেশ অধিদফতর এক সভায় নগরীর সব হাসপাতাল ও ক্লিনিকের তরলবর্জ্য পরিশোধনাগার নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত হয়। চট্টগ্রাম মহানগরের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে দৈনিক দুই থেকে আড়াই টন বর্জ্য অপসারণ করে চসিক। তবে এসব বর্জ্য সংগ্রহের পর হালিশহরের বর্জ্য ডাম্পিং স্টেশনে ফেলা হয়। বর্তমানে যে তিনটির ইটিপি ব্যবস্থা আছে সেগুলোর বর্তমান অবস্থা সরেজমিন পরিদর্শন করে চিকিৎসাবর্জ্য (ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ) বিধিমালা ২০০৮-এর আলোকে আছে কিনা তা দেখবে পরিবেশ অধিদফতর। পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম মহানগরীর পরিচালক মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী বলেন, ‘৪৯টি হাসপাতাল-ক্লিনিককে আগামী ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে তরলবর্জ্য  শোধনাগার নির্মাণ করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। আমরা চাই, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মনীতি অনুযায়ী পরিচালিত হোক।’ পরিবেশ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্য নীতিমালা ও পরিবেশ আইন অনুযায়ী প্রতিটি হাসপাতালের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য পরিশোধনাগার থাকতে হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও পরিবেশ অধিদফতর নিয়ম না মেনে পরিশোধনাগার ছাড়াই লাইসেন্স এবং পরিবেশ ছাড়পত্র প্রদান করে আসছে।    হাসপাতালসমূহের রোগীর কঠিন ও তরলবর্জ্য পরিশোধন ব্যবস্থা ছাড়াই  প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছে। ফলে মারাত্মকভাবে পরিবেশ দূষণ ও ক্ষতি করে আসছে।

 কারণ প্রতিদিনকার ময়লা, আবর্জনা, রক্ত, অন্যান্য কাটা ছেড়ার বর্জ্য কোনোপ্রকার পরিশোধন ছাড়াই ড্রেন, নালা-নর্দমাসহ পানিবাহিত হয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।   

জানা যায়, করোনাকালে দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিক পরিচালনায় চরম অব্যবস্থাপনা, লাইসেন্স না থাকা কিংবা নবায়ন না করে দিনের পর দিন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছে। অনেক হাসপাতালের বিরুদ্ধে সার্ভিস চার্জসহ বিভিন্ন নামে অতিরিক্ত ফি নেওয়ারও অভিযোগ আছে। সেবার নামে পরিচালনা করে আসছে ব্যবসা। এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতরসহ বিভাগসমূহের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্যও বেরিয়ে আসছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন এলাকার হাসপাতাল ও  ক্লিনিকগুলোতে সিভিল সার্জন কার্যালয় ও পরিবেশ অধিদফতর নিয়মিত নজরদারি শুরু করেছে। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় ইতিমধ্যে নগরের প্রায় ২০টি হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর