শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সিলেটে গতিহীন শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টা মামলা ১৯ বছরে ২১ সাক্ষ্য

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

২০০১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর। রাত ৮টায় প্রচ- বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে সিলেট নগরীর ফাজিলচিশতের একটি বাসা। বিএনপি নেতা ডা. আরিফ আহমদ রিফার মালিকানাধীন ওই বাসা ভাড়া নিয়ে তৈরি করা হচ্ছিল শক্তিশালী বোমা। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় দুই জঙ্গি। আর বিস্ফোরণের পরদিন বাসার অনতিদূরে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে ছিল শেখ হাসিনার জনসভা। আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যাই ছিল জঙ্গিদের মূল টার্গেট- তদন্তে এমন তথ্যই পায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা। শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার এই ঘটনার ১৯ বছর পূর্ণ হয়েছে গতকাল শুক্রবার। দীর্ঘ এই সময়ে এখনো কূলকিনারা হয়নি মামলার। মামলার অগ্রগতি হিসেবে এখন পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে ২১ জনের সাক্ষ্য। সিলেটের জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন             বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বর্তমানে গতিহীনভাবে চলছে মামলার কার্যক্রম। আদালত সূত্র জানায়, হত্যাচেষ্টার ঘটনার প্রায় ১৩ বছর পর ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে স্থানান্তর করা হয় জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে। এখন পর্যন্ত ১৩০টি ধার্য তারিখে মামলার ৪৭ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ২১ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ চলতি বছরের ৪ মার্চ নগরীর হোটেল আল আকসার কর্মচারী সেলিম আহমদ আদালতে সাক্ষ্য দেন। আদালত আগামী ১০ নভেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছে। ওই মামলার অন্যতম আসামি জঙ্গি মুফতি হান্নান। ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলায় তার ফাঁসি হয়েছে। সূত্র জানায়, মামলায় এখন পর্যন্ত যারা সাক্ষ্য দিয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার সাবেক এসআই আবদুল আউয়াল, আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলকারী সিআইডির পরিদর্শক প্রণব কুমার রায়।

২০০৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর প্রণব কুমার আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন বিশেষ ট্রাইবুন্যালের পিপি মফুর আলী জানান, সাক্ষীদের কারণে আলোচিত এই মামলাটি অনেকটা গতিহীন। সাক্ষীদের প্রতি সমন ও ওয়ারেন্ট ইস্যু করেও তাদের আদালতে হাজির করা যাচ্ছে না। তাই মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব হচ্ছে না। আদালত সূত্র আরও জানায়, ২০০১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সিলেটে নির্বাচনী জনসভার দিন হামলা করে শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল হরকাতুল জিহাদ (হুজি)। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এমন তথ্য জানিয়েছিল বিস্ফোরণের ঘটনার পর আহতাবস্থায় জনতার হাতে আটক হুজি সদস্য মাসুদ আহমেদ ওরফে শাকিল। এ ছাড়া পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া জঙ্গি মাওলানা আবু সাঈদ আদালতকে জানায়, সিলেট সফরে এসে শেখ হাসিনা প্রথমে হজরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহপরান (রহ.) মাজারে যাওয়ার কথা ছিল। সে অনুযায়ী তারা মাজারে যাওয়ার পথে হামলার পরিকল্পনা করে রেখেছিল। কিন্তু পরে যখন জানতে পারে শেখ হাসিনা সরাসরি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের জনসভায় অংশ নেবেন তখন তারা জনসভাস্থলের অদূরে ফাজিলচিশতের মেসে গিয়ে বোমাগুলো নাড়াচাড়া করার সময় বিস্ফোরণ ঘটে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর