মঙ্গলবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

চসিকের সামনে ছয় চ্যালেঞ্জ

ভাটা পড়েছে নিজস্ব আয়ে ♦ পিছু ছাড়ছে না আর্থিক সংকট ♦ ঋণেরভারে জর্জরিত

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সামনে নানা চ্যালেঞ্জ ও সংকট-সমস্যা ঘুরপাক খাচ্ছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার মতো আর্থিকসহ সামগ্রিক ক্ষেত্রের সক্ষমতা অনেকাংশে নেই চসিকের। ফলে উন্নয়ন ও নাগরিক সেবার কাজে চ্যালেঞ্জগুলো প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায়। চসিককে প্রতিনিয়ত কুরে কুরে খাচ্ছে। চসিকের চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে আর্থিক সক্ষমতার অভাব, নাগরিক সেবা প্রদানকারী সংস্থাসমূহের মধ্যে সমন্বয়হীনতা, দুর্বল যোগাযোগব্যবস্থা, প্রকল্প বাস্তবায়নে ম্যাচিং ফান্ড, ঠিকাদারদের বড় অঙ্কের বকেয়া এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিতে স্থায়ীকরণ-সংক্রান্ত জটিলতা। অভিযোগ আছে, দীর্ঘদিন ধরে নতুন কোনো আয়বর্ধক প্রকল্প বা স্থাপনা তৈরি হয়নি। আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস গৃহকরও বিতর্কের বেড়াজালে। ফলে ভাটা পড়েছে নিজস্ব আয়ে। পিছু ছাড়ছে না আর্থিক সংকট। বর্তমানে নানা খাতে চসিকের ঋণ আছে ৮৫৫ কোটি ৬৮ লাখ ২৯ হাজার ৪০৬ টাকা। গত প্রায় ১০ বছরে চসিক আয়বর্ধক কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারেনি। চসিকের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘অনেক চ্যালেঞ্জ ও সমস্যা-সংকট নিয়েই চসিক পরিচালনা করতে হচ্ছে। এ নিয়ে শনিবার ১৭ সদস্যের পরামর্শক কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেছি। বৈঠকে কিছু প্রস্তাব ও সুপারিশ এসেছে। আমরা চেষ্টা করছি এসব সুপারিশ-প্রস্তাবকে মূল্যায়ন করে কাজ করতে।’ তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর এবং কাস্টমসের আয়ের একটি অংশ চসিকের অনুকূলে বরাদ্দ প্রদান, ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে পুনর্মূল্যায়নকৃত হারে গৃহকর আদায় ও প্রকল্প বাস্তবায়নের ম্যাচিং ফান্ড প্রদান থেকে চসিককে অব্যাহতি- অন্তত এ তিনটি বিষয় বাস্তবায়ন করা গেলে বিদ্যমান আর্থিক সংকট নিরসন হতো। একই সঙ্গে নগরের সব দফতর/সংস্থার প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রধান সেবা প্রদানকারী সংস্থা হিসেবে চসিককে অবহিত করলে নাগরিক ভোগান্তি অনেকাংশে কম হতো।’

চসিক সূত্রে জানা যায়, নাগরিক সেবার প্রধান এ সংস্থাটির প্রধান সংকট অর্থ। উন্নয়ন কাজে যথাসময়ে বিল প্রদান করতে না পারায় অনেক সময় ঠিকাদারদের কাজ বন্ধ রাখা বা বিলম্বে কাজ শেষ করার দৃষ্টান্তও আছে। সর্বশেষ ৩০ জুলাই পর্যন্ত ঠিকাদারসহ নানা ক্ষেত্রে চসিকের দেনা আছে ৮৫৫ কোটি ৬৮ লাখ ২৯ হাজার ৪০৬ টাকা। বিল বকেয়া থাকায় ঠিকাদাররা কাজে অনীহাও দেখান। অন্যদিকে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও গৃহকর বাবদ চসিকের পাওনা ১০০ কোটি ৯৭ লাখ ৮৫ হাজার ৬১৪ টাকা। এ ছাড়া নগরে সেবা প্রদানকারী সংস্থাসমূহের মধ্যে সমন্বয়হীনতা প্রকট। চসিক একটি সড়ক মেরামত করে এলে ওয়াসা বা বিটিসিএল সেটি কাটে। এ ব্যাপারে অনেক সময় চসিককেও অবহিত করে না। ফলে নাগরিক ভোগান্তি চরমে ওঠে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর