বৃহস্পতিবার, ১ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

চট্টগ্রাম বন্দরে পাকিস্তানি ১৭৫ টন পিঁয়াজ খালাস

অপেক্ষায় আমিরাতের ২৯ টনের চালান

ফারুক তাহের, চট্টগ্রাম

ব্যবসায়ীদের এলসি করা পিঁয়াজের চালানগুলো একের পর এক আসতে শুরু করেছে চট্টগ্রাম বন্দরে। ইতিমধ্যেই মিয়ানমার ও পাকিস্তান থেকে আসা পিঁয়াজের চালান খালাস হয়েছে। গতকাল পাকিস্তান থেকে আমদানি করা ১৭৫ টন পিঁয়াজ খালাস হয়। এর আগে সোমবার মিয়ানমার থেকে আসা ৫৮ টনের প্রথম চালনটি খালাস হয় চট্টগ্রাম বন্দরে। খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকে আসা আরেকটি চালান। ২৯ টনের পিঁয়াজের চালানটি ঢাকার সজীব এন্টারপ্রাইজের নামে এসেছে। একই প্রতিষ্ঠানের নামে পাকিস্তান থেকে আসা দুই কনটেইনারে ৫৯ টন পিঁয়াজ খালাস হয়েছে। ভারতের বিকল্প হিসেবে অন্তত ১২টি দেশের পিঁয়াজে দেশের বাজার সয়লাব হয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। এছাড়া বাংলাদেশ  ট্রেডিং করপোরেশনের (টিসিবি) ট্রাকে মিলবে দেশি পিঁয়াজ।  টিসিবির চট্টগ্রাম আঞ্চলিক প্রধান জামাল উদ্দিন আহমদ জানান, এখন থেকে টিসিবির ট্রাকে দেশি পিঁয়াজ বিক্রি হবে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি কেজি ৩০ টাকায়। চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন স্পটে ২০টি ট্রাকে পিঁয়াজ, চিনি, সয়াবিন তেল ও মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে।

প্রতিটি ট্রাকে ২০০ কেজি করে পিঁয়াজ দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বুলবুল জানান, মিয়ানমার ও পাকিস্তান থেকে আসা ১৭৪ টন পিঁয়াজের ছাড়পত্র ইস্যু করা হয়েছে। এ কেন্দ্র থেকে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৫৪ টন পিঁয়াজ আমদানির জন্য ৩২২টি অনুমতিপত্র (আইপি) নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। চীন, মিসর, তুরস্ক, মিয়ানমার, নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইউক্রেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভারত (২০০ টন) ও পাকিস্তান থেকে এসব পিঁয়াজ আনবেন তারা।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এস আলম গ্রুপসহ কয়েকটি শিল্পগ্রুপ সংকট নিরসনে পিঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। নেদারল্যান্ডস, তুরস্ক ও মিসর থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন পিঁয়াজ আমদানির লক্ষ্যে এস আলম গ্রুপ এলসি খুলেছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের ছোট-বড় আমদানিকারক মিলে প্রায় ৬ লাখ টন পিঁয়াজ আমদানি করবে সমুদ্রপথে। 

দেশের অন্যতম পাইকারি বাণিজ্যালয় খাতুনগঞ্জের ইরা ট্রেডার্সের রিফাত উদ্দিন বাবু বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আসা মিয়ানমার ও পাকিস্তানের পিঁয়াজের মান ভালো। সে জন্য পাইকারি ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। বন্দর  থেকে কিছু পিঁয়াজ দেশের অন্যান্য এলাকায় সরবরাহ হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পিঁয়াজ আসার গতি দুয়েকদিনের মধ্যে আরও বাড়বে। এতে বাজারে সরবরাহ যেমন বাড়বে, দামও কমবে আশা আমদানিকারকদের।

খাতুনগঞ্জে ভোগ্যপণ্যের বড় আমদানিকারক জানান, তাদের এলসির বিপরীতে মিসরে পিঁয়াজের কনটেইনার জাহাজে লোড হয়েছে। আসতে যে কদিন সময় লাগে। পাইপলাইনে আরও আছে। প্রথম ধাপে হল্যান্ড ও মিসর থেকে পাঁচ হাজার টন পিঁয়াজ আমদানি করছে গ্রুপটি। 

জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৪০ ফুট দীর্ঘ ৯ কনটেইনার পিঁয়াজ এসছে। এর মধ্যে ‘কোটা এনগেরিক’ জাহাজে আসা দুই কনটেইনারে কায়েল স্টোরের ৫৮ টন খালাস হয়েছে বন্দর থেকে। এগুলোর রপ্তানিকারক সিঙ্গাপুরের ইন্দো সুয়েজ ট্রেডিং লিমিটেড। অন্যদিকে ‘এক্স-প্রেস লোটসি’ জাহাজে এসেছে তিন আমদানিকারকের সাত কনটেইনার পিঁয়াজ। এরমধ্যে চট্টগ্রামের গ্রিন ট্রেডের নামে পাকিস্তান থেকে এসেছে চার কনটেইনারে ১১৬ টন এবং ঢাকার সজীব এন্টারপ্রাইজের নামে এসেছে দুই কনটেইনারে ৫৯ টন। সজীবের নামে ইউএই থেকে এসেছে আরও ১ কনটেইনারে ২৯ টন।   

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর