রবিবার, ৪ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

মানবাধিকার সংগঠনের নামে চাঁদাবাজি

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

মানবাধিকার সংগঠনের নামে চাঁদাবাজি

খুলনায় বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের নামে চাঁদাবাজি ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। মামলা তদন্ত বা শালিস বিচারের নামে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্রটি। ইতিমধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের খুলনা বিভাগীয় সভাপতি অলিউল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একই নামে খুলনায় আরও দুটি মানবাধিকার সংগঠনের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। নামসর্বস্ব এ ভুয়া মানবাধিকার সংগঠনগুলো প্রতিষ্ঠিত মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে এমনভাবে নিজেদের নাম রাখছে, যাতে বিভ্রান্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এসব সংগঠনের মানবাধিকার ‘বাণিজ্য’ বেশ জমজমাট। জানা যায়, খুলনায় পুলিশ, র‌্যাব, স্বাস্থ্য বিভাগের কোনো কর্মকর্তা যোগ দিলে প্রথমদিকেই দামি উপহার দিয়ে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেন এসব সংগঠনের নেতারা।

এ ছাড়া মাঝে-মধ্যে সংগঠনের পক্ষ থেকে কাজের স্বীকৃতি প্রদানের নামে জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ওই অনুষ্ঠানে শিল্পপতি বা পাট ব্যবসায়ীদের প্রধান অতিথি করা হয়। পরে এদের কাজে লাগিয়ে প্রতারণার জাল বিস্তার করে চক্রটি। অনেক ক্ষেত্রে তারা নিজেদের জাতিসংঘ অনুমোদিত একমাত্র মানবাধিকার সংগঠনের নেতা বলেও পরিচয় দেন। খুলনা জজ কোর্টের আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম জানান, মামলা বা অভিযোগ তদন্তের নামে চক্রটি একটি পক্ষ অবলম্বন করে। পরে অভিযোগের তদন্ত বা শালিস বিচারের নামে ভয়ভীতি দেখিয়ে দুই পক্ষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। সংগঠনের প্যাডে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিঠি দিয়ে তাদের অফিসে উপস্থিত হয়ে অভিযোগের জবাব দিতেও বলা হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত দলের মানবাধিকার প্রতিবেদনের নামে আদালতে বিচারাধীন মামলায়ও প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে থাকে।

এদিকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্যানেল আইনজীবী নজরুল ইসলাম বলেন, মানবাধিকার সংগঠন ও তাদের ভুয়া কর্মীতে খুলনা ছেয়ে গেছে। যেখানে সেখানে যে কেউ সংগঠন তৈরি করছে। অশিক্ষিত, প্রতারক শ্রেণির লোকজন মানবাধিকার কর্মী পরিচয় দিয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার কমিশন’ নামে বেসরকারি কোনো সংগঠনের ভিত্তি নেই। তাদের এরই মধ্যে মানবাধিকার কমিশন নাম ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতারণার অভিযোগে ওই সংগঠনের সভাপতি পরিচয় দেওয়া অলিউল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ধরনের প্রতারণা বন্ধে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর