মঙ্গলবার, ৬ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

এখনো অজানা সেই মাদকের ঠিকানা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

এখনো অজানা সেই মাদকের ঠিকানা

অজানাই থাকছে ভয়ঙ্কর মাদক কোকেন ও ফেনইথাইলামিনের গন্তব্য। এক বছরে ভয়ঙ্কর দুই মাদকের একাধিক চালান জব্দ করা হলেও একটিরও চিহ্নিত করা যায়নি গন্তব্য কিংবা সংশ্লিষ্ট হোতাদের। অপরাধ বিশ্লেষকদের মতে- হোতাদের চিহ্নিত করতে না পারায় ভয়ঙ্কর মাদকের নিরাপদ রুটে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রাম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও প্রখ্যাত অপরাধ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘হোতাদের চিহ্নিত করতে না পারায় কোকেন ও ফেনইথাইলামিনের গন্তব্য চিহ্নিত করা যায়নি। হোতাদের গ্রেফতারের আওতায় না আসায় আন্তর্জাতিক চক্রের সদস্যরা চট্টগ্রামকে নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছে। তাই কোকেন ও ফেনইথাইলামিনের হোতাদের চিহ্নিত করা জরুরি।’ র‌্যাব-৭ অধিনায়ক মশিউর রহমান জুয়েল বলেন, ‘দেড় বছরে কোকেন ও ফেনইথাইলামিনের একাধিক চালান জব্দ করেছে র‌্যাব। তবে এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি এসব দামি মাদক দেশে আদৌ ব্যবহার হচ্ছে কি না। নাকি অন্য দেশে প্রবেশের ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারব।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কয়েকটা ধাপ পার হয়ে মাদক পাচার হয়। তাই চূড়ান্ত গন্তব্য কোথায় তা জানতে সময় লাগছে। ফেনইথাইলামিন জব্দ মামলাটি কিছুদিন তদন্ত করেছে নগরীর খুলশী থানা পুলিশ। পরবর্তীতে মামলাটির তদন্তভার পেয়েছে র‌্যাব। খুলশী থানার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ফেনইথাইলামিনসহ গ্রেফতার হওয়া ফিরোজ খান এ মাদকের বাহক ছিলেন। তিনি জানতেন না মাদকের মূল গন্তব্য কোথায় ছিল। তার দায়িত্ব ছিল অন্য একজনকে চালানটি পৌঁছে দেওয়া। তাই ওই সন্দেহভাজনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু তার আগেই মামলাটির তদন্তভার পায় র‌্যাব।’ জানা যায়, মাদক পাচারের অন্যতম রুটে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রাম। ইয়াবা ছাড়াও কোকেন ও ফেনইথাইলামিনের মতো দামি মাদক পাচারের রুটে পরিণত হয়েছে বন্দরনগরী। গত পাঁচ বছরে দামি এ দুই মাদকের কমপক্ষে পাঁচটি চালান জব্দ করা হয়েছে। যার মধ্যে গত ১২ আগস্ট নগরীর খুলশী এলাকা থেকে কোটি টাকা দামের ফেনইথাইলামিন নামে ভয়ঙ্কর এক মাদকসহ ফিরোজ খান নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। এটি কোকেনের চেয়ে ভয়ঙ্কর মাদক হিসেবে চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর সদস্যরা। গত ১৬ জানুয়ারি কোতোয়ালি থানাধীন টাইগারপাস এলাকায় ১৫ কোটি টাকার কোকেনসহ বখতেয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। গত বছরের ২৫ নভেম্বর নগরীর হালিশহর থানাধীন বড়পোল এলাকা থেকে প্রায় এক কেজি কোকেনসহ আনোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে কোকেনের বৃহৎ একটি চালান ধরা পড়ে। বলিভিয়া থেকে সূর্যমুখী তেলের আড়ালে ওই চালানটি আনার অভিযোগ ওঠে মেসার্স খান জাহান আলী লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর