মঙ্গলবার, ৬ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

মধ্যযুগীয় কায়দায় গাছে বেঁধে নির্যাতন আটক ৪

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

মধ্যযুগীয় কায়দায় গাছে বেঁধে নির্যাতন আটক ৪

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার পাটগ্রাম ইউনিয়নে এক ব্যক্তিকে রশি দিয়ে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের শিকার ওই ব্যক্তির নাম মোস্তফা আলী (৩৬)। তিনি উপজেলার পাটগ্রাম ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সর্দারপাড়া এলাকার আবদুল গফুরের ছেলে। পেশায় তিনি রংমিস্ত্রি। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় পাটগ্রাম থানা পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। শনিবার বিকালে ওই ব্যক্তিকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করা হয় এবং তার সঙ্গে থাকা নগদ অর্থ ও মোবাইল ফোন হাতিয়ে নেয় অভিযুক্তরা। থানা পুলিশ ও এজাহার সূত্র জানা গেছে, উপজেলার পাটগ্রাম ইউনিয়নের সর্দারপাড়া প্রাণকৃষ্ণ এলাকার মোস্তফা আলী রংমিস্ত্রির কাজ এবং বাড়িতে গরু পালন করে জীবিকা নির্বাহ করেন। শনিবার বিকালে মোস্তফা আলী নিজ বাড়ি থেকে রং কেনার জন্য ৫০ হাজার টাকা নিয়ে রংপুরের উদ্দেশে রওনা হন। পথে জগৎবেড় ইউনিয়নের ডাকুয়াপাড়া এলাকায় পৌঁছলে একই এলাকার হামিদুল ইসলাম ও তার স্ত্রী তাছলিমা বেগম, মেয়ে হাওয়া খাতুন, আবদুল খালেক, নুরুল হক, মোস্তফা ও ফাতেমা বেগম দলবদ্ধ হয়ে মোস্তফা আলীর পথ রোধ করেন। তারা মোস্তফা আলীকে আটক করে তার কাছে ১২ হাজার টাকা দাবি করেন। তিনি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা তাকে এলোপাতাড়িভাবে মারধর করেন। এ সময় মোস্তফা আলীর সঙ্গে থাকা ৫০ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন কেড়ে নেন তারা। এরপর আবদুল খালেকের কাঁঠালগাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় তাকে মারধর করা হয়। গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের সময় অনেকে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন।

 এ ঘটনায় ওই দিনই নির্যাতনের শিকার মোস্তফা আলীর স্ত্রী মহসেনা বেগম পাটগ্রাম থানায় মামলা করেন। শনিবার রাতে পাটগ্রাম থানা পুলিশ অভিযুক্ত হামিদুল ইসলাম, তাছলিমা বেগম, আবদুল খালেক ও ফাতেমা বেগমকে আটক করে।

নির্যাতনের শিকার মোস্তফা আলী বলেন, ‘প্রায় ছয় মাস আগে আমার ছেলে অসুস্থ হলে আমি পার্শ্ববর্তী থানা কালীগঞ্জ এলাকা থেকে একজন কবিরাজ এনে চিকিৎসা করাই। হামিদুল ও তার স্ত্রী তাছলিমা বেগম একই কবিরাজের কাছে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। চিকিৎসা গ্রহণকালে তাদের ১২ হাজার টাকা খরচ হয়। চিকিৎসায় তাদের কাজ না হওয়ায় তারা বিভিন্ন সময় আমার কাছে ওই টাকা ফেরত চান। আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করেন।’

এ বিষয়ে পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার মহন্ত বলেন, গাছে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় নির্যাতনের শিকার মোস্তফা আলীর স্ত্রী বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ চারজনকে আটক করে। তাদের লালমনিরহাট আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর