বুধবার, ৭ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা
গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী হত্যা

তিন আসামির সাজা কমে আমৃত্যু কারাদন্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০০১ সালে চট্টগ্রামের নাজিরহাট কলেজের অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদন্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদন্ড দিয়েছে আপিল বিভাগ। গতকাল বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির ভার্চুয়াল আপিল বেঞ্চ এ রায় দেয়। আমৃত্যু দন্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি হলো- তসলিম উদ্দীন ওরফে মন্টু, আজম ও আলমগীর কবির ওরফে বাইট্টা আলমগীর। রায়ে আদালত বলেছে, যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাদন্ড।

আসামি আলমগীর কবির ওরফে বাইট্টা আলমগীরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন এবং তসলিম উদ্দীন ওরফে মন্টু ও আজমের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন হেলাল উদ্দিন মোল্লা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত বলেন, এ মামলায় বিচারিক আদালত চারজনকে মৃত্যুদন্ড এবং অপর চারজন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়। এরপর হাই কোর্ট ডেথ রেফারেন্স শুনানি নিয়ে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত চার আসামির মধ্যে একজন মারা যাওয়ায় বাকি তিনজনের মৃত্যুদন্ড বহাল রেখেছিলেন। ওই তিন আসামি আপিল দায়ের করলে আপিল বিভাগ তিনজনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছে। আদালত বলেছে, এই যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাদন্ড।

এদিকে আপিল বিভাগের রায়ের পর হতাশা প্রকাশ করেছেন কৃষ্ণ মুহুরীর স্ত্রী উমা মুহুরী। নিজ বাসায় আমাদের চট্টগ্রাম প্রতিনিধিকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানান, হাই কোর্টে মৃত্যুদন্ড বহাল ছিল, আপিল বিভাগ সেই সাজা কমিয়ে দিয়েছে। এমন করুণ মৃত্যু, যারা হারিয়েছে তারাই শুধু বোঝে কষ্ট কী। 

বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০১ সালের ১৬ নভেম্বর সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জামাল খান এলাকায় নাজিরহাট কলেজের অধ্যক্ষ গোপাল মুহুরীর বাসায় ঢুকে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা তাকে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করে। সর্বজনশ্রদ্ধেয় এই শিক্ষককে হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরাসহ সর্বস্তরের মানুষ রাস্তায় নেমে আসে।

গুলিবিদ্ধ মুহুরীর বীভৎস ছবি পরদিন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে দেশ-বিদেশে তোলপাড় ওঠে। জামায়াত-শিবিরের দলীয় ক্যাডারেরা এই হত্যাকান্ডে জড়িত বলে গণমাধ্যমে তথ্য আসে। এই ঘটনায় গোপাল মুহুরীর স্ত্রী রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের তৎকালীন অডিট কর্মকর্তা উমা মুহুরী বাদী হয়ে নগরীর কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০০৩ সালের জানুয়ারি মাসে মামলাটি নিয়মিত আদালত থেকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হলে বিচারে গতি আসে। ২০০৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল থেকে চার আসামির মৃত্যুদন্ডের আদেশ আসে। একই রায়ে আরও চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড দেওয়া হয়। চারজন খালাস পান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর