শুক্রবার, ৯ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

‘অনির্দিষ্ট’ রিপোর্ট আতঙ্কে সিলেটের বিদেশযাত্রীরা

করোনা রিপোর্টের জন্য বাতিল হচ্ছে ফ্লাইট

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার ফল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সিলেটের বিদেশগামী প্রবাসীরা। চার দিন ধরে নমুনা পরীক্ষায় অনেকের রিপোর্ট এসেছে ‘ইনডিটারমিনেট’ বা ‘অনির্দিষ্ট’। পরীক্ষার ফল ‘পজিটিভ’ বা ‘নেগেটিভ’ কোনোটাই শনাক্ত করতে না পেরে ল্যাব থেকে রিপোর্টে লিখে দেওয়া হচ্ছে ‘অনির্দিষ্ট’। ফ্লাইটের ৭২ ঘণ্টা আগে নমুনা দিয়ে রিপোর্ট না পেয়ে অনিশ্চয়তায় পড়ছেন যাত্রীরা। এতে বাধ্য হয়ে বাতিল করতে হচ্ছে ফ্লাইট। হঠাৎ সিলেটের দুই ল্যাবে এমন সমস্যা দেখা দেওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ রকম সমস্যা সমাধানে ‘জিন এক্সপার্ট আরটি পিসিআর মেশিন’ আনার উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। গত চার দিনে ওসমানী মেডিকেলের ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় ৫৮ জন বিদেশযাত্রীর রিপোর্ট আসে ‘অনির্দিষ্ট’। ফ্লাইটের ৪৮ ঘণ্টা আগে এমন রিপোর্ট পাওয়ার পর যাত্রীদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়। উপায়ান্তর না পেয়ে অনেকেই ফ্লাইট বাতিল করেন। তবে হঠাৎ কী কারণে নমুনা পরীক্ষায় এ সমস্যা হচ্ছে সে বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারছেন না। যুক্তরাজ্যপ্রবাসী আকমাম ইসলাম চৌধুরী জানান, ঢাকা থেকে বৃহস্পতিবার ভোরে তার ফ্লাইট, কিন্তু মঙ্গলবার তার করোনা পরীক্ষার ফল ‘ইনডিটারমিনেট’ বা ‘অনির্দিষ্ট’ এসেছে।

ইতিমধ্যে তিনি বিদেশযাত্রার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ফেলেছেন। কিন্তু রিপোর্ট ভুল আসায় এখন সবকিছু অনিশ্চিত। ফ্লাইট মিস হলে তারা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। এখন কী করণীয়, তা জানতে সিভিল সার্জন কার্যালয় এবং ওসমানী মেডিকেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কেউ নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারছেন না বলেও জানান তিনি।

এসব বিষয়ে সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মন্ডল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ১২ থেকে ১৪ হাজারের মতো বিদেশযাত্রীর নমুনা সংগ্রহ করেছি। কখনো ভুল হয়নি। কয়েকদিন ধরে ভুল রিপোর্ট আসছে। নমুনা সংগ্রহে ভুল হলে আগেও রিপোর্ট ভুল আসত। এখন কী কারণে তা ঘটছে আমরা বলতে পারছি না।’

সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. ময়নুল হক বলেন, ‘আমাদের ল্যাবে এখন পর্যন্ত ৩৮ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। কখনো এ রকম সমস্যা হয়নি। সমস্যা নমুনা সংগ্রহের ক্ষেত্রেও হতে পারে, যন্ত্রের কারণেও হতে পারে।’

সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিসের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান জানান, ‘বিদেশযাত্রীদের নমুনা সংগ্রহ করা হয় সিভিল সার্জন অফিসের মাধ্যমে। এর আগে কখনো এ রকম সমস্যা না হলেও গত কয়েকদিন থেকে শুধু বিদেশযাত্রীদের ক্ষেত্রে হচ্ছে। সমস্যা কোথায় তা চিহ্নিত করা যায়নি। তবে সমস্যা সমাধানে “জিন এক্সপার্ট আরটি পিসিআর মেশিন” আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে মেশিনটি চলে আসার কথা। তখন কারও নমুনা পরীক্ষা নিয়ে এ রকম সমস্যা দেখা দিলে এক ঘণ্টার মধ্যে পুনরায় পরীক্ষা করা যাবে। এতে প্রবাসীদের দুশ্চিন্তা কাটবে।’

প্রসঙ্গত, গত ২৩ জুলাই থেকে নির্ধারিত বুথে নমুনা সংগ্রহ করে সিলেট বিভাগের বিদেশগামীদের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে সিলেট এমজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১২ হাজার বিদেশযাত্রীর নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর