রবিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

ডিএসসিসিতে বদলি আতঙ্ক

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

ডিএসসিসিতে বদলি আতঙ্ক

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) বদলি আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত মঙ্গলবার একযোগে প্রকৌশল বিভাগের প্রায় সব প্রকৌশলীকে গণবদলি করা হয়েছে। ঢাকার সিটি করপোরেশনের ইতিহাসে গত ২০ বছরে এমন ঘটনা আর ঘটেনি। এর আগে ওয়ার্ড সচিব এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা-পরিদর্শকদের একযোগে বদলি করা হয়। ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই প্রতিষ্ঠানকে ঢেলে সাজানোর জন্য বদলি, চাকরিচ্যুতসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে চলেছেন। এ ঘটনাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, গত মঙ্গলবার ডিএসসিসির প্রকৌশল বিভাগের ৬৮ জনকে একযোগে গণবদলি করা হয়। এর মধ্যে ৫১ জন প্রকৌশলী এবং ১৭ জন কার্য সহকারী রয়েছেন। পৃথক আটটি চিঠিতে এসব কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়। জানা যায়, এসব প্রকৌশলীর অধিকাংশ নগর ভবন ও অঞ্চলগুলোতে বছরের পর বছর একই স্থানে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তাদের কারও কারও বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ রয়েছে। সে জন্য তাদের ডিএসসিসির এক অঞ্চল থেকে আরেক অঞ্চলে বদলি করা হয়েছে। এতে অনেকে হতাশ হয়েছেন। তারা বিভিন্নভাবে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ ব্যাপারে গণমাধ্যমে মুখ খুলতে নারাজ। তবে অনেকে এ ঘটনাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। বদলি হওয়া এক প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগে বদলি হতেও সুপারিশ করতে হতো; কিন্তু গণবদলির কারণে কোনো তদবির ছাড়াই জায়গা বদল ভালো লাগছে। তিনি আরও বলেন, ডিএসসিসিতে প্রায় ২০ বছর ধরে চাকরি করছি। মাঝে মধ্যে দু-একজনকে বদলি করা হতো; কিন্তু এর আগে এমন গণবদলি আর দেখিনি।  ডিএসসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পুর) মুন্সি মো. আবুল হাসেম বলেন, অনেকে একই জায়গায় দীর্ঘদিন থাকলে কাজের গতি কমে যায়। এ জন্য এ বদলি একটি ভালো উদ্যোগ। এতে কাজের গতি বাড়বে। তিনিও জানান, গত ২০ বছরে প্রকৌশল বিভাগে এরকম গণবদলি আর হয়নি। এর আগে মেয়র ফজলে নূর তাপস গত ১৬ মে ডিএসসিসির মেয়র হিসেবে যোগ দিয়েই প্রকৌশল ও রাজস্ব বিভাগের কয়েকজন বড় কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করেন। এরপর আরও কয়েকটি বিভাগে বদলি ও চাকরিচ্যুত করা হয়। গত ২০ জুন তিনজন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে বদলি করা হয়। গত ২৯ জুন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপপ্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা, পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা ও পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক পদের ৫৭ জনকে একযোগে গণবদলি করা হয়। এরপর বিভিন্ন ওয়ার্ডের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদেরও একযোগে বদলি করেন। এ ছাড়া ৫৯ বছর পার হলেও ডিএসসিসিতে প্রায় সাত শতাধিক কর্মচারী কাজ করে যাচ্ছেন। মেয়র পর্যায়ক্রমে তাদের চাকরিচ্যুত করছেন। ২০ সেপ্টেম্বর প্রকৌশল ও পরিবহন বিভাগের ১০ জন শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা হয়। এর আগে সম্পত্তি বিভাগের কয়েকজন উচ্ছেদ শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করেন মেয়র। ডিএসসিসির বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, ডিএসসিসিতে দীর্ঘদিন থেকেই বিভিন্ন দফতরে অনিয়ম-দুর্নীতি চলে আসছে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর