রবিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি বানভাসিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

অবশেষে ২৫ দিন পর গতকাল দেশের সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে। টানা চার দফা বন্যার পর ১৬ সেপ্টেম্বর ফের কুড়িগ্রামে বিপৎসীমা অতিক্রম করে ধরলা নদী। ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিপৎসীমা ছাড়ায় ৯টি নদ-নদী। আবারও বন্যায় ডুবে যায় উত্তর, উত্তর-পূর্ব, উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর-মধ্যাঞ্চলের বেশকিছু জেলা। বর্তমানে নদ-নদীর পানি কমলেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষ। নদী ভাঙনে প্রতিদিন ভিটেমাটি হারাচ্ছে অসংখ্য পরিবার। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধ ও গোখাদ্যের সংকট। এ ছাড়া এখনো বর্জ্যযুক্ত কাদায় ঢেকে আছে ঘরবাড়ি।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের গতকাল সকালের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় করতোয়া নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে আসায় বর্তমানে দেশের সব নদ-নদী বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ছাড়া দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানিসমতল হ্রাস পাচ্ছে। আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে নতুন করে কোনো নদ-নদীর পানির বিপৎসীমা অতিক্রমের শঙ্কা নেই। এদিকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, নদ-নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র হয়েছে ভাঙন। সিরাজগঞ্জে প্রতিদিনই যমুনার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, আবাদি জমি ও বিভিন্ন স্থাপনা। কুড়িগ্রামে ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে প্রতিদিন বিলীন হচ্ছে শত শত ঘরবাড়ি, আবাদি জমি। এ ছাড়া এখনো নিম্নাঞ্চল ও চরের অনেক ফসলি জমি থেকে পানি না নামায় ডুবে আছে ফসল। এবারের বন্যায় সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, সদর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার চর ও নিম্নাঞ্চলের ৩ হাজার ৪০৬ হেক্টর জমির রোপা আমন, ৯৩১ হেক্টর জমির মাষকলাই, ২৩৪ হেক্টর জমির শীতকালীন সবজি, ৮০ হেক্টর জমির বাদাম ও ৬৮ হেক্টর জমির মরিচ পানিতে নিমজ্জিত হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। জেলার প্রায় ৩০ হাজার বসতভিটার নিম্নাংশ একেবারে পচে গেছে। এতে অনেক মানুষের ঘর ভেঙে পড়েছে। চরম বিপদে আছে কৃষক ও নিম্নবিত্ত বানভাসি পরিবারগুলো। হাতে কাজ নেই, টাকা নেই। ঘরে নেই খাবার। ভাঙনে অনেকে হারিয়েছেন শেষ সম্বল ভিটেমাটি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন অন্যের জমিতে। কারও জায়গা হয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে। এ ছাড়া বন্যার পানি নামলেও অধিকাংশ এলাকায় ঘরবাড়িতে কাদা থাকায় অনেকে ঘরে ফিরতে পারছেন না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর