সোমবার, ১২ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

ধর্ষণ অপরাধ বাড়ছে খুলনায়

ইন্টারনেটের অপব্যবহার ও সহজলভ্য অশ্লীল ভিডিওকে দায়ী করেন বিশেষজ্ঞরা ♦ লকডাউনে গৃহবন্দী কর্মহীন থাকায় বিকৃত মানসিক ভাবধারা পরিবর্তন হয়েছে, দাবি বিশ্লেষকদের

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

ধর্ষণ অপরাধ বাড়ছে খুলনায়

এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুলনা মহানগরীর গল্লামারী ও পাইকগাছায় দুই কিশোরী নিকটাত্মীয়ের দ্বারা ধর্ষিত হয়েছে। এ ছাড়া কয়রার বালিয়াপুর গ্রামে সাড়ে চার বছরের শিশু ও তেরখাদায় পুলিশ সদস্য কর্তৃক চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। মাদকের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনাও ঘটেছে। অপরাধ বিশেষজ্ঞদের দাবি, লকডাউনে দীর্ঘ সময় গৃহবন্দী থাকার কারণে অনেকের মধ্যে মানসিক ভাবধারার পরিবর্তন হয়েছে। সহজলভ্য অশ্লীল ভিডিও, অপরাধের শাস্তি না হওয়া ও ইন্টারনেটের অপব্যবহারে সামাজিক অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে।

জানা যায়, খুলনায় প্রতি মাসে গড়ে ২০টির বেশি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। যার মধ্যে উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে শিশু ধর্ষণের ঘটনা। ৯ অক্টোবর মহানগরীর গল্লামারীতে ভাগ্নিকে ধর্ষণের অভিযোগে খালু চুন্নু মিয়াকে (৪০) মারধর করে পুলিশে দেয় স্থানীয় জনতা। তার বিরুদ্ধে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ ও এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে ২০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রস্তাবের অভিযোগ রয়েছে। একই দিন পাইকগাছায় বোনের বাড়ির সবাইকে কোমল পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ভাগ্নিকে ধর্ষণের অভিযোগে এক মামাকে (২৮) গ্রেফতার করে পুলিশ। ৪ অক্টোবর রাতে ওই ঘটনার চার দিন পর থানায় মামলা করেন কিশোরীর বাবা। ১৮ আগস্ট কয়রা উপজেলার বালিয়াপুর গ্রামে সাড়ে চার বছরের এক শিশু ও ১৪ সেপ্টেম্বর তেরখাদায় পুলিশ সদস্য কর্তৃক চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

জনউদ্যোগ, খুলনা নারী সেলের আহ্বায়ক শামীমা সুলতানা শিলু বলেন, উদ্বেগজনক হারে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনা বাড়ছে। ঘর থেকে মেয়েরা বাইরে বের হলে আতঙ্কে থাকেন অভিভাবকরা। একটি ঘটনারও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে অপরাধ প্রবণতা কমে যেত। এদিকে এ অপরাধের পেছনে দীর্ঘ সময় গৃহবন্দী থাকার কারণে বিকৃত মানসিক ভাবধারা দায়ী বলে মনে করেন সরকারি সুন্দরবন কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক প্রকাশ চন্দ্র অধিকারী। তিনি বলেন, পাশ্চাত্য সংস্কৃতি, গৃহবন্দী অবস্থায় ইন্টারনেটের অপব্যবহার বৃদ্ধি, সহজলভ্য অশ্লীল ভিডিও, হতাশাবোধ সামাজিক মূল্যবোধকে ভেঙে দিয়েছে। যার ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে সমাজে। বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা খুলনার সমন্বয়কারী অপরাধ বিশ্লেষক অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম বলেন, নানা কারণে আমাদের সামাজিক, পারিবারিক বন্ধন ভেঙে গেছে। মামলার দীর্ঘসূত্রতায় অপরাধ করার পরও শাস্তি হয় না। ফলে অপরাধীরা উৎসাহিত হয়।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর