সোমবার, ১২ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

একুশের বইমেলা নিয়ে প্রকাশকদের প্রস্তাবনা

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

বৈশ্বিক দুর্যোগ করোনার থাবায় বিপর্যস্ত সারা বিশ্ব। লকডাউনের পর সবকিছু খুলে দেওয়া হলেও এখনো স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলছে সব কার্যক্রম। এ অবস্থায় আগামী বছরের একুশে গ্রন্থমেলা নিয়েও উদ্বিগ্ন প্রকাশক ও লেখকরা। আসন্ন মেলাকে সুষ্ঠু ও সফলভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বাংলা একাডেমিকে বেশ কয়েকটি প্রস্তাবনা দিয়েছে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি। গতকাল বিকালে একাডেমির মহাপরিচালকের কাছে সমিতির পক্ষ থেকে রাজধানী শাখার সভাপতি মাজহারুল ইসলাম এবং সহসভাপতি শ্যামল চন্দ্র পাল প্রস্তাবনাগুলো পেশ করেন। প্রস্তাবনাগুলো হলো- বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সদস্য ব্যতীত অন্য কোনো প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে স্টল বরাদ্দ না দেওয়া (তবে সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণের দায়িত্ব বাংলা একাডেমির), করোনার কারণে ন্যূনতম ভাড়ায় স্টল বরাদ্দ দেওয়া, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ এবং ২০২১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ একুশের চেতনাকে বিশেষভাবে স্মরণযোগ্য করে তুলতে প্রকৃত ও পেশাদার প্রকাশকদের স্টলগুলো নামমাত্র মূল্যে উপহার দেওয়া, করোনার স্বাস্থ্যঝুঁকি ও স্বাস্থ্যবিধির কারণে প্রতিটি স্টলের চারদিক উন্মুক্ত রাখা এবং প্রতিটি স্টল নির্দিষ্ট দূরত্বে স্থাপন করা, মেলার প্রবেশদ্বার দৃষ্টিনন্দন করা, স্বাস্থ্যবিধির বিষয় মাথায় রেখে প্রবেশদ্বারের সংখ্যা বৃদ্ধি করা, প্রবেশপথে আর্চওয়ের সঙ্গে ডিসইনফেকশন টানেলের মাধ্যমে মেলায় আগতদের স্প্রে করার ব্যবস্থা গ্রহণ, পাঠক-লেখক-প্রকাশকবান্ধব বইমেলা আয়োজনের জন্য মেলা কমিটিতে প্রকাশনা সংশ্লিষ্ট সংগঠন থেকে ন্যূনতম সাতজন করে প্রকাশক প্রতিনিধি রাখার ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।

এই প্রস্তাবনাগুলোর বাস্তবায়ন হলে এই দুর্যোগকালেও আগামী বছরের বইমেলা অন্যবারের মতো একটি সফল মেলার রূপ পাবে বলে প্রকাশকরা দাবি করেন।

প্রকাশকরা জানান, বৈশ্বিক দৃষ্টান্ত, তাদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা, প্রবীণ ও নবীন প্রকাশকদের মতামত, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমের লেখক-প্রকাশক-পাঠকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে উল্লিখিত প্রস্তাবনাগুলো উঠে এসেছে।

ভাষাসংগ্রামী অধ্যাপক ডা. মির্জা মাজহারুল ইসলাম আর নেই : ভাষাসংগ্রামী অধ্যাপক ডা. মির্জা মাজহারুল ইসলাম (৯৩) আর নেই। রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সকাল ৯টায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বাদ জোহর বারডেম জেনারেল হাসপাতালে নামাজে জানাজা শেষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে প্রবীণ এই চিকিৎসক ও ভাষাসংগ্রামী হাসপাতালটির আইসিইউতে ভর্তি হন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বারডেম হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের অনারারি চিফ কনসালটেন্ট ছিলেন। ভাষা আন্দোলনে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৮ সালে তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন। ভাষাসংগ্রামী অধ্যাপক ডা. মির্জা মাজহারুল ইসলাম উপমহাদেশের প্রখ্যাত শল্য চিকিৎসক। অল্পসময়ে অধিকসংখ্যক রোগীর অস্ত্রোপচার করে সারা বিশ্বের ইতিহাসে তিনি বিশ্বরেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। ভাষা আন্দোলনের শুরু থেকেই তিনি জড়িত ছিলেন। তিনি ১৯৪৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর গঠিত প্রথম রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সদস্য। ভাষা আন্দোলনের প্রায় প্রতিটি সভা, সমাবেশ ও বিক্ষোভে তিনি অংশ নেন এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভাষা আন্দোলন সংগঠনে অনবদ্য ভূমিকা পালন করেন। একুশের রক্তাক্ত ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষীও তিনি। ঐতিহাসিক আমতলা সভায় অংশগ্রহণ করে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা, কন্ট্রোল রুমে দায়িত্ব পালন, ভাষা শহীদ বরকতের অপারেশনে সহযোগী হিসেবে অংশগ্রহণসহ ভাষা আন্দোলনের প্রতিটি পর্বে তার উপস্থিতি ছিল উল্লেখ করার মতো। একুশের পরবর্তী সময়েও তিনি একুশের চেতনা বাস্তবায়ন এবং একুশের স্মৃতি সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তারই উদ্যোগে গড়ে ওঠে ভাষা আন্দোলন জাদুঘর ও ভাষা আন্দোলন পরিষদ। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধেরও অন্যতম একজন সংগঠক। স্কুলে অধ্যয়নকালে তিনি ভারত ছাড় আন্দোলন ও কলেজে অধ্যয়নকালে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেন। কলকাতাতেই তিনি বঙ্গবন্ধুসহ বিশিষ্ট নেতাদের সান্নিধ্য লাভ করেন। ১৯২৭ সালের ১ জানুয়ারি টাঙ্গাইলের চারান গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মির্জা মাজহারুল ইসলাম।

আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের ১৪৯তম জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন : বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান গবেষক আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের ১৪৯তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপনে একক বক্তৃতানুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বাংলা একাডেমি। গতকাল সকালে একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনের এই আয়োজনে সাহিত্যবিশারদ : পুথিপ্রেমিকের লোকসংস্কৃতি সন্ধান’ শীর্ষক বক্তৃতা করেন গবেষক অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরী।

একাডেমির সভাপতি শামসুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তৃতা করেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর