মেগা স্যাটেলাইট সিটি লিমিটেড প্রকল্পের নামে ১২ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের ৫ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পিবিআই ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ। গতকাল দুপুরে পিবিআইর রাজধানীর বনশ্রী কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মূলত এই চক্রের টার্গেট থাকে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তারা। চক্রের হোতা এখনো গ্রেফতার হয়নি। ওই ব্যক্তিসহ এখনো পলাতক রয়েছে নয়জন। তাদের গ্রেফতারের অভিযান চলছে। চক্রের পাঁচজনকে রূপগঞ্জে তাদের নতুন অফিস পূর্বাচল গ্রিন সিটি নামের এক অফিস থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার করা হয়েছে। চক্রটি ফ্ল্যাট ও জমি দেওয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিত। এরা হলো ওয়াহিদুল ইসলাম রানা, রেজাউল করিম, পিংকী আক্তার, আবদুর রহমান দাড়িয়া এবং জাকির হোসেন। পিবিআই ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সামসুজ্জামান বাবু বলেন, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পেয়ে তাদের সুনির্দিষ্ট মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার সঙ্গে সম্পৃক্ত। এদের আসামি করে গত ২ অক্টোবর রাজধানীর বনানী থানায় একটি মামলা হয়েছিল। পরবর্তীতে ওই মামলা তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে দেওয়া হয়।
তদন্তে পিবিআই জানতে পারে, পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে গ্রেফতার হওয়া রেজাউল করিম বনানীর ওই মামলার বাদীর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে ‘মেগা স্যাটেলাইট সিটি লি.’ নামে একটি প্রজেক্টের কথা বলে অর্থ বিনিয়োগ করতে বলে। সে অনুযায়ী সরল বিশ্বাসে বাদী ওই প্রতিষ্ঠানে মাসিক ১ লাখ টাকার ওপর ৬ হাজার টাকা লাভ দেওয়ার শর্তে বিভিন্ন সময়ে সর্বমোট ৫৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেন। ১৬ মাস পর চক্রের সদস্যরা তার সঙ্গে নানান প্রতারণা শুরু করে। ওই সময় আসল টাকা ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও চক্রের সদস্যরা বিনিয়োগের টাকা ফেরত না দিয়ে নানান ধরনের কথা বলে তার সঙ্গে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। তারা কখনো পূর্বাচলের বহুতল ভবনে একটি ফ্ল্যাট দিতে চায়। আবার কখনো বিভিন্ন জায়গায় জমি কিনে দেওয়ার কথা বলে। তবে বাস্তবে তার কিছুই দেয়নি তাকে। এমনকি তার কাছ থেকে নেওয়া টাকাও ফেরত দেয়নি। এভাবে তারা আরও অনেক অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবীর কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।