শনিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

ক্ষুধা সূচকে বড় অগ্রগতি বাংলাদেশের

তবু সার্বিক ক্ষুধার মাত্রা ‘গুরুত্ব’ পর্যায়ে

প্রতিদিন ডেস্ক

ক্ষুধা ও অপুষ্টি দূরীকরণে গত এক বছরে বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে বাংলাদেশে। বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচকে এবার ১০৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৭৫তম; যা গত বছর ছিল ৮৮তম। অর্থাৎ গত বছরের চেয়ে বাংলাদেশ ১৩ ধাপ এগিয়েছে। কয়েক বছর ধরেই ক্ষুধা দূরীকরণে ধারাবাহিক উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। এই সূচকে প্রতিবেশী দেশ ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে কয়েক বছর ধরেই। তবে বাংলাদেশের সার্বিক ক্ষুধার মাত্রা এখনো ‘গুরুতর’ পর্যায়ে রয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট গতকাল যে ‘বিশ্ব ক্ষুধা সূচক-২০২০’ প্রকাশ করেছে, তাতে এসব তথ্য উঠে এসেছে। কেবল সূচকের অবস্থানেই অগ্রগতি নয়, ক্ষুধার সংজ্ঞা নির্ধারণে যে চারটি মাপকাঠিকে বিচার করে গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেস্ক (জিএইচআই) করা হয়, তার সবটাতেই গতবারের তুলনায় বাংলাদেশ এগিয়েছে। অপুষ্টির হার, পাঁচ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে উচ্চতার তুলনায় কম ওজনের শিশুর হার, পাঁচ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে কম উচ্চতার শিশুর হার ও পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার- এ চারটি মাপকাঠিতে প্রতিটি দেশের পরিস্থিতি বিচার করে তৈরি হয় জিএইচআই। প্রতিটি দেশের স্কোর হিসাব করা হয়েছে ১০০ পয়েন্টের ভিত্তিতে। সূচকে সবচেয়ে ভালো স্কোর হলো শূন্য। স্কোর বাড়লে বুঝতে হবে, ক্ষুধার রাজ্যে সেই দেশের পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। আর স্কোর কমা মানে, সেই দেশের খাদ্য ও পুষ্টি পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট বলছে, গত এক বছরে বাংলাদেশ স্কোরের দিক দিয়েও এক ধাক্কায় অনেকটা উন্নতি করতে পেরেছে।

মোট স্কোর গতবারের ২৫ দশমিক ৮ থেকে কমে হয়েছে ২০ দশমিক ৪। আর এর ফলেই সার্বিক সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান এক লাফে ১৩ ধাম এগিয়ে এসেছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১৯৯০ সালে স্কোর ছিল ৫২ দশমিক ২, ১৯৯৫ সালে ৫০ দশমিক ৩, ২০০০ সালে ৩৬ দশমিক ১, ২০০৫ সালে ৩০ দশমিক ৭, ২০১০ সালে ৩০ দশমিক ৩, ২০১৫ সালে ২৭ দশমিক ৩, ২০১৬ সালে ২৭ দশমিক ১, ২০১৭ সালে ২৬ দশমিক ৫, ২০১৮ সালে ২৬ দশমিক ১, ২০১৯ সালে ২৫ দশমিক ৮ এবং ২০২০ সালে স্কোর ২০ দশমিক ৪। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার নির্ধারিত সংজ্ঞা অনুযায়ী, একটি শিশুর প্রতিদিনের গ্রহণ করা খাদ্যের পুষ্টিমান গড়ে এক হাজার ৮০০ কিলোক্যালরির কম হলে বিষয়টিকে ক্ষুধা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

ক্ষুধা সূচক বলছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ১৩ শতাংশ অপুষ্টির শিকার’ পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ৯.৮ শতাংশের উচ্চতার তুলনায় ওজন কম; ওই বয়সী শিশুদের ২৮ শতাংশ শিশুর উচ্চতা বয়সের অনুপাতে কম এবং পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর হার ৩ শতাংশ। গত বছর এই চার ক্ষেত্রে হার ছিল যথাক্রমে ১৪.৭ শতাংশ, ১৪.৪ শতাংশ, ৩৬.২ শতাংশ এবং ৩.২ শতাংশ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর