মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা
করোনা সংক্রমণ

সংকটে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা

পুঁজি নেই কারও হাতে, ব্যবসা ছেড়ে অন্য পেশায় ফিরছেন অনেকেই

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

সংকটে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা

করোনা পরিস্থিতির কারণে টানা আট মাসে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কমে গেছে কর্মতৎপরতাও। এরই মধ্যে অল্প পুঁজি দিয়ে অনেকেই বেশ কয়েক বছর ধরেই নানা ধরনের ব্যবসা শুরু করলেও চলমান করোনাভাইরাসের কারণে ব্যবসায় লাগাম টেনে ধরে। ফলে ক্ষতিগ্রস্তের পাশাপাশি ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পের ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তারা পুঁজি সংকটের ফলে ব্যবসাও পরিবর্তন করেছেন। তবে প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য ছাড়া দীর্ঘদিন ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকায় নতুন করে কার্যক্রম শুরুর পর পূঁজির ঘাটতিতে পড়েছেন উদ্যোক্তাদের অনেকে। এতে প্রত্যাশিত পুঁজি বা ঋণের অভাবে অনেকেই বিকল্প ব্যবসায় ঝুঁকছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে প্রায় ২০ হাজারের বেশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তা রয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত প্রণোদনা ঋণ পেয়েছে মাত্র এক হাজারেরও কম। ব্যাংকগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ঋণ আবেদন হলেও ঋণ ছাড়ের পরিমাণ খুবই কম। ব্যাংকগুলো এই ঋণ প্রদানে অনীহা দেখাচ্ছে। মূলত ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও শতভাগ ঝুঁকিমুক্তভাবে ঋণ প্রদানের জন্য উদ্যোক্তারা সরকারের করোনাকালীন প্রণোদনা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তারা। তাছাড়া করোনা পরিস্থিতির কারণে সরকার অতি ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পের জন্য সরকার ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঋণ প্রদানের ঘোষণা দিলেও অনেকেই তা পাননি। এর আগে জেলা এসএমই ঋণ বিতরণে মনিটরিং কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেনের সভাপতিত্বে গত ৫ আগস্ট বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।  জানা গেছে, চট্টগ্রামের পাদুকা তৈরির ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানার সংখ্যা প্রায় ৫০০টিরও বেশি। তবে আর্থিক দেনা ও নতুন বিনিয়োগের অভাবে এসব কারখানার এক-তৃতীয়াংশই বন্ধ হয়ে গেছে। প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক-কর্মচারীর এই খাতটির অর্ধেকেরও বেশি শ্রমিক-কর্মচারী কারখানা বন্ধের কারণে বিকল্প পেশায় চলে গেছে। পুঁজির অভাবে এই খাতের অনেক উদ্যোক্তাও বিকল্প ব্যবসায় সরে যাচ্ছেন। চট্টগ্রাম ক্ষুদ্র পাদুকা শিল্প মালিক গ্রুপ সূত্রে জানা গেছে, সমিতির অধীনে ৫০০ উদ্যোক্তার কেউই সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী ৪ শতাংশ সুদে ঋণ পায়নি। অনেকেই পুঁজির সংকটে ব্যবসায় ফিরতে পারছেন না। যেসব কারখানা নতুন করে ব্যবসা করছেন তারাও সংকটে রয়েছে। চট্টগ্রাম ক্ষুদ্র ও পাদুকা শিল্প মালিক গ্রুপের আহ্বায়ক কবির আহম্মদ বলেন, দেশের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প খাত পাদুকা শিল্প। করোনার কারণে পুঁজি হারানোর পাশাপাশি অনেক কারখানাও বন্ধ হয়ে গেছে। কিছু কিছু কারখানা মালিক প্রতিষ্ঠান খুললেও পুঁজি সংকটে কাজ চালাতে পারছেন না। বিসিক চট্টগ্রামের উপ-মহাব্যবস্থাপক ও ঋণ বিতরণ মনিটরিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক আহমেদ জামাল নাসের চৌধুরী বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য প্রণোদনা ঋণ দেওয়ার জন্য ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা রয়েছে।  শুরুতে কিছুটা বিলম্ব হলেও ব্যাংক থেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের কাছে ঋণ বিতরণের পরিমাণ বাড়ছে বলে জানান তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর