মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

থ্রি পাস শ্বশুর, টেন পাস জামাই চিকিৎসা দেন বিডিএস সেজে

র‌্যাবের অভিযানে দুজনকে কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

টেনেটুনে টেন পাস করেছেন জাহিদুল ইসলাম, এসএসসি উত্তীর্ণ হতে পারেননি। তিনিই বিডিএস চিকিৎসক সেজে লিখছেন প্রেসক্রিপশন। তার শ্বশুর নূর হোসেন। তিনি পড়ালেখা করেছেন ক্লাস থ্রি পর্যন্ত। তিনিও সেজেছেন এমবিবিএস ডাক্তার। জামাইয়ের লেখা প্রেসক্রিপশনে সই করেন তিনি। ঠিকমতো ওষুধের নাম না বলতে পারলেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে সেবা দিচ্ছেন জামাই-শ্বশুর। রাজধানীর খিলগাঁও তিলপাপাড়া এলাকায় গড়ে তুলেছেন ‘পঞ্চগড় ডেন্টাল ক্লিনিক’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানও। জামাই-শ্বশুরের এই ভুয়া ক্লিনিকের সন্ধান পেয়েছে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল সেখানে অভিযান চালিয়ে তাদের দুজনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় অভিযুক্ত শ্বশুর নূর হোসেনকে দুই বছর ও তার জামাতা জাহিদুল ইসলামকে এক বছরের কারাদ- দেওয়া হয়েছে। এসব তথ্য নিশ্চিত করে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, ‘পঞ্চগড় ডেন্টাল ক্লিনিক’ পরিচালনার আড়ালে অন্য চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করা প্রেসক্রিপশন প্যাডে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিলেন তারা। ভুক্তভোগী কয়েকজনের অভিযোগের ভিত্তিতে খিলগাঁওয়ের ওই ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে জামাই-শ্বশুরকে আটক করা হয়েছে। একই সঙ্গে পঞ্চগড় ডেন্টাল কেয়ার নামক প্রতিষ্ঠানটিকে সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীদের সব অভিযোগের প্রমাণই পাওয়া যায় অভিযানে। এখানে এসে দেখা যায়, অন্য ডাক্তারের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে সার্জারিসহ দাঁতের সব ধরনের চিকিৎসা দিচ্ছেন নূর হোসেন ও জাহিদুল ইসলাম। নূর হোসেন ওষুধের নামই ঠিকমতো উচ্চারণ করতে পারছিলেন না। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন, তিনি তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। তার জামাতা জাহিদুল ইসলামের আগে পাথর কোম্পানিতে চাকরি করতেন।

পরে সেই চাকরি ছেড়ে শ্বশুরের সঙ্গে এসে ডেন্টাল ক্লিনিকটিতে বসতে থাকেন, তিনিও নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিতেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া চিকিৎসা দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর