বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সেমিনারে অভিমত

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভূমিকা জনমনে আস্থা সৃষ্টি করেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভূমিকা জনমনে আস্থা সৃষ্টি করেছে

জাতীয় প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটছেন ক্লাব নেতৃবৃন্দ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ৬৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, ‘পূর্ব বাংলা রুখিয়া দাঁড়াও’ সম্পাদকীয় লিখে ছিষট্টির সাম্প্রদায়িকতা বন্ধে শক্ত ভূমিকা নিয়েছিল জাতীয় প্রেস ক্লাব। ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানসহ প্রতিটি স্বৈরাচারবিরোধী ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভূমিকা জনগণের মনে একটি আস্থার জায়গা সৃষ্টি করেছে, এখানে এসে কথা বলা যায়, সবাই কথা বলতে পারেন। এখানে এখনো পাশাপাশি দুই সেমিনার কক্ষে ওলামা-মাশায়েখরা ও জয় বাংলা সাংস্কৃতিক জোটের নেতা-কর্মীরা অনুষ্ঠান করতে পারেন। স্বাধীনতাবিরোধীরা ছাড়া প্রেস ক্লাবে সব দল-মত ও পথের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অবারিত। জনগণের এই আস্থার জায়গাটা প্রেস ক্লাব ধরে রেখেছে।গতকাল ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘জাতীয় প্রেস ক্লাবের ৬৬ বছর ও বাংলাদেশের সাংবাদিকতা’ শীর্ষক এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম। এতে দুটি মূল প্রবন্ধের একটির উপস্থাপক সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব হারুন হাবীব। অন্য প্রবন্ধটির লেখক প্রবীণ সাংবাদিক আমানুল্লাহ; তিনি অসুস্থ থাকায় প্রবন্ধটি পাঠ করেন অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ও ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। বক্তব্য দেন প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শফিকুর রহমান এমপি, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সেক্রেটারি ইহসানুল করিম, বিএফইউজের সভাপতি মোল্লা জালাল, বাংলাদেশের খবরের সম্পাদক আজিজুল ইসলাম ভুইয়া, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি ওমর ফারুক, প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার সাহা ও কামরুল ইসলাম চৌধুরী, বিশিষ্ট সাংবাদিক সোহরাব হাসান, জাহিদুজ্জামান ফারুক, ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, ডিইউজের সাবেক সভাপতি কাজী রফিক, সাব-এডিটর কাউন্সিলের মুহতাসিম বিল্লাহ, কবি জাহাঙ্গীর ফিরোজ, তরুণ তপন চক্রবর্তী, শাহনাজ বেগম প্রমুখ। করোনা মহামারীর কারণে সব আনন্দ আয়োজন বাতিল করে এবার সংক্ষিপ্তভাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন করা হয়। সেমিনার শেষে প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটা হয়। শফিকুর রহমান তার বক্তৃতায় বলেন, ২০১৪ সালে রাজাকারমুক্ত প্রেস ক্লাব গড়ে তোলার আন্দোলন গড়ে তুলেছি। ২০১৫ সালে প্রেস ক্লাবে একসঙ্গে সাড়ে ছয় শ সাংবাদিককে সদস্যপদ দিয়েছি। দেশে এখন ৯ কোটি মিডিয়া। ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটস অ্যাপ সবই মিডিয়া। এখন ফেসবুক দেখে সংবাদপত্র বের করার পরিবেশ তৈরি হয়ে গেছে।

সাইফুল আলম বলেন, গণতন্ত্র রক্ষা ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে জনগণের বিশ্বাস ও আস্থার জায়গাটা এখনো জাতীয় প্রেস ক্লাব ধরে রেখেছে। সাংবাদিকতা পেশা ও নেতৃত্বের বিষয়ে তিনি বলেন, অনেকের পকেট ভারী হয়ে যাচ্ছে কিন্তু আকৃতিতে তারা ছোট হয়ে যাচ্ছে। পেশার মর্যাদা রক্ষায় প্রেস ক্লাব অঙ্গীকারবদ্ধ। ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, যে অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, জাতীয় প্রেস ক্লাব তা ধারণ ও লালন করছে। স্বাধীনতাবিরোধীরা ছাড়া সব দল-মতের ঊর্ধ্বে থেকে প্রেস ক্লাব মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়িয়েছে। তিনি আরও বলেন, করোনাকালে সংবাদপত্রশিল্প একটি টার্ময়েলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তবে খুব শিগগিরই এ অবস্থার অবসান হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মোল্লা জালাল বলেন, বিশ্বের কোথাও বাংলাদেশের মতো এত ধনী সাংবাদিক পাওয়া যাবে না। আবার বাংলাদেশের মতো এত নিপীড়িত, নিষ্পেষিত ও নির্যাতিত সাংবাদিকও বিশ্বের কোথাও নেই। জাতীয় প্রেস ক্লাবের ছিষট্টি বছরে আমাদের অর্জন দৃশ্যমান। কিন্তু এই সময়ে বিসর্জনের পরিমাণ কত, তা আমাদের বিচেনায় রাখতে হবে। আজিজুল ইসলাম ভুইয়া তার বক্তৃতায় পাকিস্তান আমলে সাম্প্রদায়িকতার ভয়াবহতা বন্ধ করতে সে সময়ে বাংলা ইংরেজি সব দৈনিকে প্রকাশিত ঐতিহাসিক অভিন্ন সম্পাদকীয় ‘পূর্ব বাংলা রুখিয়া দাঁড়াও’ প্রকাশে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভূমিকা বর্ণনা করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর