বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

দাফনের সময় নড়ে ওঠা শিশুর অবস্থার উন্নতি

দু-এক দিন পর দেওয়া হবে খাবার

নিজস্ব প্রতিবেদক

নবজাতকটি বেঁচে যাওয়া যেমন মিরাকেল, তেমনি এখন তাকে বাঁচানোও মিরাকেল বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নবজাতক ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক মনিষা ব্যানার্জি। তিনি বলেন, আমাদের দেশে ২৮ সপ্তাহে কোনো শিশু ভূমিষ্ঠ হলে তাকে বাঁচানো সম্ভব হয় না। আর এই শিশুটি ভূমিষ্ঠ হয়েছে ২৬ সপ্তাহে। আমরা তাকে বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। আগের চেয়ে এখন অনেকটা ভালোর দিকে। তবে এখনো আশঙ্কাজনক। বর্তমানে অক্সিজেন চলছে, পাশাপাশি অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে। আর দু-এক দিন পর অল্প অল্প করে খাবার দেওয়া হবে। এসব বাচ্চার যে কোনো সময় অবস্থা খারাপ হয়ে যেতে পারে। তাকে বাঁচানোও মিরাকেল হবে। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন। গত শুক্রবার ভোরে ঢামেক হাসপাতালে একটি মেয়ে শিশুর জন্ম হয়। জন্মের পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতাল থেকে মৃত্যু সনদ নিয়ে বাবা ইয়াসিন নবজাতককে আজিমপুর কবরস্থানে নিয়ে যান। পরে দাফনের খরচ পোষাতে না পেরে সেখান থেকে নবজাতককে নিয়ে যান রায়েরবাজার কবরস্থানে।

 কবর খোঁড়ার সময় নবজাতকটি নড়ে ওঠে এবং কাঁদতে থাকে। তখন ইয়াসিন তাকে নিয়ে আবার ঢামেক হাসপাতালে ছুটে আসেন। এ ঘটনায় সমালোচনার মুখে ঢামেক হাসপাতাল একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয় হাসপাতালের নবজাতক ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক মনিষা ব্যানার্জিকে।

নবজাতকের বিষয়ে জানাতে গতকাল ঢামেক হাসপাতালের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, জন্মের পর নবজাতককে পৌনে এক ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন চিকিৎসকরা। এই সময়ের মধ্যে তার কোনো স্পন্দন পাওয়া যায়নি। নবজাতককে মৃত ঘোষণায় চিকিৎসকদের কোনো অবহেলা ছিল না।

ডেলিভারি হওয়ার পর বাচ্চাটির স্পন্দন ছিল না। আমাদের চিকিৎসকদের নেগলিজেন্সি ছিল না। তারা ৪৫ মিনিট অবজারভেশনে রেখেছেন, তারপরও কোনো স্পন্দন না পেয়ে মৃত ঘোষণা করেছেন। যেহেতু বাচ্চাটি কবরস্থানে গিয়ে নড়েচড়ে উঠেছে, তাই এর দায়ভার এড়ানো যায় না। এ ঘটনায় গঠিত চার সদস্যের তদন্ত কমিটি কিছু সুপারিশ করেছে। সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা প্রশ্ন তোলেন, নড়েচড়ে ওঠার পর শিশুটিকে যখন দ্বিতীয়বার ঢামেক হাসপাতালের নবজাতক ইউনিটে আনা হয়, তখন সেখানকার কেউ কেউ তাকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে বলেছিলেন। হাসপাতালে দ্বিতীয় দফায় ভর্তি হতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় কেটে যায়। এটা কেন হলো? এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক বলেন, তদন্তে এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে ঢামেক হাসপাতালের নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক, উপপরিচালক আলাউদ্দিন আল আজাদসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর