বৃহস্পতিবার, ২২ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

কমিশন ভাগাভাগি নিয়ে তুলকালাম

শেরেবাংলা মেডিকেলে ডাক্তারকে আটকে রেখে ইন্টার্নদের মারধর

রাহাত খান, বরিশাল

সিন্ডিকেট কারসাজিতে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এমআরআই, সিটি স্ক্যানসহ গুরুত্বপূর্ণ রোগ পরীক্ষার যন্ত্রপাতি বিকল রেখে রোগীদের বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠান ডাক্তাররা। সেই সব সেন্টার থেকে প্রতি মাসে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার কমিশন আদায় করেন তারা। কমিশনের টাকার ভাগাভাগি নিয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দ্বন্দ্ব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ নিয়ে গত মঙ্গলবার হাসপাতালের মেডিসিন ইউনিট-৪ এর সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মাসুদ খানকে তার অফিস কক্ষে দরজা আটকে বেদম মারধর করেছে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তাকে রক্ষা করতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হয়েছেন মেডিসিন বিভাগের ইউনিট-৩ এর সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মাহফুজুর রহমানও। এ ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন লাঞ্ছনার শিকার ডা. মো. মাসুদ খান। এ নিয়ে শেরেবাংলা মেডিকেলে বিস্ফোরণোন্মুখ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষসহ বড় ধরনের অঘটনের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিস্টরা। বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে মেডিসিন, সার্জারি, গাইনি, শিশু, নাক-কান-গলা এবং অর্থপেডিক্স ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা প্রতি মাসে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা কমিশন পান বলে জানিয়েছেন বরিশাল ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক শীর্ষ নেতা।  করোনাকালে শেরেবাংলা মেডিকেলের মেডিসিন বিভাগের চারটি ইউনিটে আসা সব কমিশন ডা. মাসুদ খান আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মূলত এই অর্থের হিস্যা নিয়েই ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে চিকিৎসক মাসুদ খানের দ্বন্দ্ব শুরু হয় বলে একটি গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। ইন্টার্ন চিকিৎসক নেতা সজল পান্ডে জানান, ডা. মাসুদ খান নির্ধারিত ডায়াগনস্টিক ছাড়া রিপোর্ট আনা হলে ছুড়ে ফেলে দেন তিনি।

 ইন্টার্ন চিকিৎসক এবং ছাত্রলীগকে দেওয়ার কথা বলে তিনি (মাসুদ খান) বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে লাখ লাখ টাকা আদায় করেন। ওই টাকা নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর পেছনে খরচ করেন এক সময়ের ছাত্রশিবির নেতা মাসুদ খান। ছাত্রলীগের নামে টাকা আদায় করে জামায়াতের পেছনে ব্যয় করার কারণ জানতে চাইলে উল্টো তিনি ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এ ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য তিনি মারধরের অভিযোগ তুলছেন বলে দাবি করেন ছাত্রলীগ নেতা ইন্টার্ন চিকিৎসক সজল পান্ডে।

শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন জানান, মেডিসিন বিভাগের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এবং এর পেছনের ঘটনা (কমিশন আদায়) খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর