বৃহস্পতিবার, ২২ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

সড়কে চলছে নৈরাজ্য বাড়ছে দুর্ঘটনা

নিরাপদ সড়ক দিবস আজ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

বহুল প্রত্যাশিত ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ বাস্তবায়নের পরও সড়কে চলছে চরম নৈরাজ্য। বন্ধ হয়নি অসম প্রতিযোগিতা, বিপজ্জনক ওভারটেকিং ও গাড়ি চালানোর সময় মোবাইলে কথা বলার মতো গুরুতর অপরাধ। গত এক বছরে  চট্টগ্রাম বিভাগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে ২৩৩টি। এসব দুর্ঘটনায় ২৪২ জন নিহত ও আহত হন ৬১৩ জন। সবচেয়ে বেশিসংখ্যক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে গত বছরের আগস্ট মাসে। ওই মাসে ৩৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন ৪২ জন। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) চট্টগ্রাম বিভাগ এ পরিসংখ্যান তৈরি করেছে। পরিসংখ্যান বলছে, গত অর্থবছরের  ১০ মাসের (লকডাউনের কারণে এপ্রিল-মে মাসের হিসাব গণনা করা হয়নি)  প্রতি মাসে ২০ জনের বেশি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। তাছাড়া গত অর্থবছরে দুর্ঘটনার চেয়ে নিহতের সংখ্যাও বেশি। ফলে সড়কে চলছে চরম নৈরাজ্য, বাড়ছে দুর্ঘটনা, বাড়ছে নিহত-আহতের সংখ্যা। আজ নিরাপদ সড়ক দিবস। এবার দিবসের উপপাদ্য বিষয় ‘মুজিববর্ষের শপথ, সড়ক হবে নিরাপদ’।

দিবস সামনে রেখে আজ সকাল ১০টায়  বিআরটিএ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উদ্যোগে নগরের এলজিইডি ভবনের সম্মেলন কক্ষে সেমিনার এবং নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) চট্টগ্রাম মহানগর শাখার উদ্যোগে বিকাল সাড়ে ৩টায় প্রেস ক্লাবে চালক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

ভুক্তভোগী যাত্রীদের অভিযোগ, বহুল প্রত্যাশিত সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ বাস্তবায়নের পরও সড়কে চলছে চরম নৈরাজ্য। বিশৃঙ্খলা, অসম প্রতিযোগিতা,  বিপজ্জনক অভারটেকিং, গাড়ি চালানোর সময় মোবাইলে কথা বলা, সড়কে অরাজকতা, ইচ্ছামতো ভাড়া আদায়, রোড পরিবর্তন, যততত্র ইউটার্ন ও যাত্রী হয়রানি কমেনি বিন্দুমাত্র। ফলে যাত্রী ভোগান্তি, যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। 

বিআরটিএ চট্টগ্রাম বিভাগের উপ পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘সড়ক  দুর্ঘটনা বাড়ছে। সঙ্গে চালক-যাত্রী ও পথচারিদের সচেতনতামূলক কর্মসূচিও  বাড়ছে। তবে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রধান কাজ হলো চালক ও যাত্রীকে  অবশ্যই সচেতন এবং দায়িত্বশীল হতে হবে। দুই পক্ষকেই সর্বোচ্চ সতর্কতার পরিচয় দিতে হবে। আমরাও চাই সড়ক নিরাপদ থাকুক। অকালে যেন কোনো প্রাণহানি না ঘটে।’   

নিসচা চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক শফিক আহমেদ সজীব বলেন, ‘সড়ককে নিরাপদ করতে বছরব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করা হয়। ২০০৪ সাল  থেকে প্রতি বছর ২০০ জন করে চালককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে ৭০০ শিক্ষককে। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ সামনে রেখে অনুষ্ঠিত হয় সেমিনার। আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য হলো সবার সহযোগিতায় নিরাপদ সড়ক প্রতিষ্ঠা।

বিআরটিএ সূত্রে জানা যায়, গত অর্থবছরে চট্টগ্রাম বিভাগে সড়ক দুর্ঘটনা হয় ২৩৩টি। এসব দুর্ঘটনায় ২৪২ জন নিহত ও আহত হন ৬১৩ জন। এর মধ্যে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ৩১টি দুর্ঘটনায় ২৬ জন নিহত ও আহত হন ২৯০ জন। আগস্টে ৩৭টি দুর্ঘটনায় ৪২ জন নিহত ও আহত হন ৮৮ জন। সেপ্টেম্বরে ২৭টি দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত ও আহত হন ৩০ জন। অক্টোবরে ২৬টি দুর্ঘটনায় ২২ জন নিহত ও আহত হন ৪৮ জন। নভেম্বরে  ২৩টি দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত  ও আহত হন ১৯ জন। ডিসেম্বরে ২২টি দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত ও আহত হন ৪১ জন। জানুয়ারিতে ১৭টি  দুর্ঘটনায় ৩০ জন নিহত ও আহত হন ৩০ জন। ফেব্রুয়ারিতে ১৫টি দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত ও আহত হন ২৩ জন। মার্চে ১৬টি দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত ও আহত হন ৩৩ জন এবং জুনে ১৯টি দুর্ঘটনায় নিহত হন ২০ জন ও আহত হন ১১ জন। করোনাভাইরাসের কারণে এপ্রিল মাসের তথ্য হিসাবে আনা হয়নি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর