শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

সংকটে ১০ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

সংকটে ১০ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী

দীর্ঘদিন ধরেই চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে চট্টগ্রামের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কেজি স্কুলগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীরা আর্থিক সংকটে পড়েছেন। কেউ কেউ প্রতিষ্ঠানও বন্ধ করে দিচ্ছেন। তবে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় পরিবারের খরচ জোগাড় করতে কষ্ট হচ্ছে। এ অবস্থায় কেজি স্কুলসহ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ১০ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী নানাভাবে ব্যাপক আর্থিক সংকটে পড়েছেন। এতে সরকার ও দায়িত্বশীলদের কাছে ঋণ সুবিধাসহ নানা সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন কেজি স্কুল অ্যাসোসিয়েশন ও শিক্ষকরা।

করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে সারা দেশের মতো চট্টগ্রামের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে আছে। মার্চ থেকে টানা ৭ মাস ব্যক্তিমালিকানাধীন কেজি স্কুলসহ বেসরকারি ও সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। কেউ কেউ আর্থিক সংকটে শহর ছেড়ে গ্রামেও চলে গেছেন। এ দীর্ঘ ছুটিতে টিউশন ফিনির্ভর এসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এক নিদারুণ অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে উঠেছে।

জানা গেছে, চট্টগ্রামে ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে ও প্লে শ্রেণি থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত এসব প্রতিষ্ঠানের বন্ধের সময়ও সরকারের সঙ্গে সংগতিতে অনলাইনের মাধ্যমে ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থীর পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠান বেশির ভাগ ভাড়া বাড়িতে এবং শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতনের ওপর নির্ভরশীল। মাসিক আয়ের ৪০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ৪০ ভাগ এবং ২০ ভাগ বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ইন্টারনেট ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খাতে ব্যয় হয়ে থাকে।

সরকার কিংবা অন্য কোনো সংস্থার কোনো অর্থনৈতিক সুবিধা এসব প্রতিষ্ঠান পায় না। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরা স্বল্প বেতন ও প্রাইভেট টিউশনির ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এতে শিক্ষক-কর্মচারীরা না পাচ্ছেন স্কুলের বেতন, না পাচ্ছেন টিউশনির বেতন।

চট্টগ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রিডার্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের চেয়ারম্যান ও সংগঠক মঈনুদ্দীন কাদের লাভলু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চট্টগ্রামের কেজি স্কুলগুলোর বর্তমানে করুণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সব পেশায় প্রণোদনার ব্যবস্থাও করেছে সরকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও বাড়ি ভাড়াসহ নানা খরচ বন্ধ নেই। বেসরকারি শিক্ষা উদ্যোক্তাদের জন্য এখনো কোনো সরকারি ঘোষণাও আসেনি।

মুরাদপুর লাইমলাইট গ্রামার স্কুলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. খুরশিদ আলম বলেন, এ স্কুলের টিউশন ফি হচ্ছে একমাত্র আয়ের উৎস। স্কুলের বাড়ি ভাড়া, শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দেওয়া হয়। কিন্তু মাসের পর মাস বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনও দিতে পারছি না, ঘর ভাড়াও দেওয়া যাচ্ছে না। কিন্ডার গার্টেন এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম খান বলেন, এই সংকটময় মুহূর্তে বিশেষ নজর দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর আবেদন করেছি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর