সোমবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

খাওয়া যায় না ওয়াসার পানি

নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না রাজশাহীর ওয়াশ পয়েন্ট আউট

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

খাওয়া যায় না ওয়াসার পানি

এমনিতেই রাজশাহীতে পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) পানি কোনো ধরনের শোধন করা হয় না। ৯৬ শতাংশ পানির জোগান ভূগর্ভ থেকে হয় বলে পানি বিশুদ্ধ ধরে নিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তোলা হয়। কিন্তু এই পানিতেও আছে দুর্গন্ধ। পানিতে ভেসে আসে ময়লা। নিয়মিত পাইপলাইনের ওয়াস পয়েন্ট আউট পরিষ্কার না করার কারণে পানিতে এ ময়লা এবং দুর্গন্ধ হচ্ছে। এই মুহূর্তে নগরীর হড়গ্রাম পূর্বপাড়া, কোর্ট স্টেশন ও দড়িখড়বোনাসহ বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পানিতে দুর্গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এসব পানি পানের অযোগ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর পানিতে ভাসমান ময়লার কারণে সংসারের অন্যান্য কাজেও এ পানি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। হড়গ্রাম পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা আবদুস সালাম বলেন, তাদের এলাকায় গলির মুখে ওয়াসার পাইপলাইনের ওয়াস আউট পয়েন্ট আছে। কিন্তু অনেক দিন ধরেই এ পয়েন্ট আউট খুলে ময়লা বের করা হয়নি। এ কারণে গোটা পাইপের ভিতর ময়লা জমেছে। পানিতে দুর্গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। শ্যাওলা ভেসে আসছে। একই অভিযোগ করেন ওই এলাকার বাসিন্দা রেজাউল করিম রেজা। তিনি বলেন, ময়লা ও দুর্গন্ধের কারণে ওয়াসার পানি এই এলাকায় ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তারপরও ওয়াস আউট পয়েন্ট খুলে পাইপ পরিষ্কারের কোনো উদ্যোগ নেই।  জানা গেছে, রাজশাহী নগরীজুড়ে ওয়াসার পানি সরবরাহ লাইন আছে ৭১২ দশমিক ৫০ কিলোমিটার। দৈনিক প্রায় ৫ দশমিক ১০ কোটি লিটার পানি বিক্রি করছে ওয়াসা। তবে ওয়াসার পানির মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। উন্নত পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে ২০১১ সালে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পানি সরবরাহ বিভাগ ভেঙে আলাদা ওয়াসার যাত্রা শুরু হলেও লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ সংস্থাটি। বর্তমানে ওয়াসার গ্রাহক প্রায় ৪২ হাজার ৬৮০ জন। সবমিলে প্রতিদিন পানির চাহিদা ১১ দশমিক ৩৩ কোটি লিটার। কিন্তু উৎপাদিত হচ্ছে ৭ দশমিক ৭৮ কোটি লিটার। এর ৯৬ শতাংশই আসছে ভূগর্ভ থেকে। জনপ্রতি দৈনিক ১৯০ দশমিক ৭৪ লিটার পানি উৎপাদন হলেও ব্যবহার হচ্ছে ১২৬ দশমিক ৩০ লিটার। নগরীতে ওয়াসার ৫টি পানি শোধনাগার আছে। পদ্মার পানি নির্ভর শ্যামপুরে একমাত্র ভূ-উপরিস্থ পানি শোধনাগারটি সচল থাকে বছরে মাত্র চার মাস। বাকি চারটি ভূগর্ভস্থ পানি শোধনাগার পরীক্ষামূলকভাবে চালুর পর থেকে বিকল। এই অবস্থায় ৯৬টি গভীর নলকূপের মাধ্যমে সরাসরি ভূগর্ভস্থ পানি সরবরাহ করছে ওয়াসা। নগরীর কুমারপাড়া এলাকার বাসিন্দা মোহন কর্মকার বলেন, ওয়াসার সরবরাহ করা পানি পানযোগ্য নয়। ময়লা ছাড়াও পানিতে প্রচুর আয়রন। পাত্রে সংরক্ষণ করলে লাল স্তর পড়ে যায়। ফুটিয়ে পান করতে গিয়ে দেখা যায় নিচে সাদা স্তর। রাজশাহী ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী পারভেজ মামুদ বলেন, তারা চেষ্টা করেন প্রতি মাসে একবার প্রতিটি ওয়াশ আউট পয়েন্ট খুলে পরিষ্কার করার। কিন্তু জনবল স্বল্পতার কারণে কাজটা কঠিন হয়ে যায়।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর