রবিবার, ১ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

অন্য ধর্মে আঘাত না করার অঙ্গীকারে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘অন্য ধর্মের ওপর আঘাত না করার’ অঙ্গীকার ও যথাযোগ্য মর্যাদায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে দেশব্যাপী পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে গত শুক্রবার রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে আনন্দ র‌্যালি, শোভাযাত্রা ও শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইসলামিক ফাউন্ডেশন, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান মিলাদ মাহফিল, আলোচনা সভা ও কোরআনখানিসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালন করেছে। রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণ থেকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর (সা.) জশনে জুলুস শোভাযাত্রা নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আন্জুমানে রহমানিয়া মইনিয়া মাইজভান্ডারীয়া। জশনে জুলুস শেষে অনুষ্ঠিত ‘আন্তর্জাতিক শান্তি মহাসমাবেশ’ থেকে অন্য ধর্মের ওপর আঘাত না করার আহ্বান জানানো হয়। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনিয়া মাইজভান্ডারিয়ার ইমাম ও পার্লামেন্ট অব ওয়ার্ল্ড সুফিজমের প্রেসিডেন্ট মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানি ওয়াল হোসাইনি। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। সেই ইসলাম ধর্ম প্রচারে, মানবজাতির কল্যাণে আল্লাহতায়ালা রসুলকে (সা.) তার দূত হিসেবে আমাদের মধ্যে পাঠান। আমাদের সবার কাছে রসুলের (সা.) জীবন শিক্ষণীয়। তিনি আরও বলেন, কোনো ধর্মের অনুসারীরাই তাদের ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের অবমাননা মেনে নিতে পারেন না। মুসলিম হিসেবে মহানবীর (সা.) অবমাননা কীভাবে মেনে নেব? কিন্তু মহানবী (সা.) অন্য ধর্মকে শ্রদ্ধা করতেন এবং তাঁর অনুসারীদেরও অন্য ধর্ম বা ধর্মাবলম্বীদের অবমাননা করতে মানা করেছেন। এ সময় মন্ত্রী অন্য ধর্মের ওপর আঘাত না করার আহ্বান জানান। সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী বলেন, পৃথিবী থেকে অন্ধকার-অনাচার ব্যভিচারসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ দূর করতে আলোর মশাল নিয়ে শুভাগমন করেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)।

তিনি পৃথিবীতে মানবিক সমাজ গড়ে তোলার জন্য কাজ করেছেন এবং সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, অন্য ধর্ম বিশ্বাসের ওপর আঘাতের নাম বাকস্বাধীনতা হতে পারে না। ফ্রান্সসহ ইউরোপের কিছু দেশ মহানবী (সা.)-এর বিরুদ্ধে অবমাননাকর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করে ধর্মীয় সম্প্রতির পরিবর্তে সংঘাত উসকে দিচ্ছে। তিনি এসবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। একই সঙ্গে প্রিয় নবীজির অবমাননা ঠেকাতে মুসলিম বিশে^র ঐক্য কামনা করেন।

এ উপলক্ষে রাজধানীর সড়কদ্বীপে পবিত্র কালেমাখচিত পতাকা ও জাতীয় পতাকা টানানো হয়। সরকারি স্থাপনাগুলো আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়। জেলখানা, এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রমে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়।

জাতীয় প্রেস ক্লাব এ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে শুরু হয়েছে পক্ষকালব্যাপী অনুষ্ঠানমালা।

ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রামে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা-সংলগ্ন খানকাহ-এ-কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়ার উদ্যোগে লাখো মানুষের জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত হয়। নারায়ণঞ্জে বাহাদুর শাহ মুজাদ্দেদীর নেতৃত্বে জশনে জুলুসের র‌্যালি হয়। মিনহাজ উল  কোরআন ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ কুমিল্লা বিভাগের উদ্যোগেও জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর