সোমবার, ২ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

অপরাধের আখড়া ঢাকা উদ্যান

ছিনতাই ডাকাতি পেশাদার খুনিদের অভয়ারণ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

অপরাধের আখড়া ঢাকা উদ্যান

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকা অপরাধের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। হত্যা, ধর্ষণ, অস্ত্র-গুলি ও মাদক বেচাকেনা, ছিনতাইসহ সেখানে প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের অপরাধ ঘটছে। এর নেপথ্যে রয়েছে কয়েকটি সন্ত্রাসী বাহিনী। এর মধ্যে জলদস্যু কবির বাহিনী ও লম্বু মোশারফ বাহিনী বেপরোয়া। এসব বাহিনীর সন্ত্রাসীরা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে তাদের কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছে। আর তাদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। পুলিশ ও অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে, জলদস্যু কবির বাহিনীর প্রধান মো. কবিরের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর ও সাভার থানাসহ বিভিন্ন থানায় দুই ডজন মামলা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে হত্যা, গণধর্ষণ, চাঁদাবাজি, দস্যুতা, ছিনতাই অন্যতম। কবিরের নামে রয়েছে গ্রেফতারি পরোয়ানা। একের পর এক অপরাধ করেই লাপাত্তা বনে যান তিনি। কবিরের অন্যতম সহযোগী লতিফ ও নাজমুল। অন্যদিকে লম্বু মোশারফের বিরুদ্ধে অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। দুবার তিনি র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হলেও জামিনে বেরিয়ে ফের চালিয়ে যাচ্ছেন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড । জানা গেছে, ১৩ অক্টোবর চাকরির সন্ধানে বের হওয়া এক তরুণীকে মোহাম্মদপুরের একতা হাউজিং ৩ নম্বর সড়কের শেষ প্রান্তে নিয়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গণধর্ষণ করা হয়। ওই তরুণীর অভিযোগ, মোহন, মোস্তফা, কবির ও নাছির নামে স্থানীয় চার সন্ত্রাসী এ অপকর্ম করেছে। ঘটনার পরদিন ভুক্তভোগী তরুণী বাদী হয়ে ওই চারজনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। অভিযুক্তদের মধ্যে মোহন গ্রেফতার হলেও অন্যরা অধরা। ২৬ অক্টোবর রাতে চাঁদ উদ্যান এলাকার সাতমসজিদ হাউজিংয়ের একটি বাসা থেকে সন্ত্রাসী তরিকুল ইসলাম ওরফে সোহেলকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, চার রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগাজিন, ৭২০ পিস ইয়াবা ও মাদক বিক্রির ৫৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। র‌্যাব বলছে, সন্ত্রাসী সোহেল দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন লোককে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও মাদক কেনাবেচাসহ সন্ত্রাসী কর্মকা- চালিয়ে আসছে। ৩ অক্টোবর চাঁদাবাজির টাকার ভাগ-বাটোয়ারা এবং আন্ডারওয়ার্ল্ডের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের জেরে একতা হাউজিং এলাকায় খুন হন সিরাজুল ইসলাম শিরু নামে এক ঠিকাদার। পুলিশ বলছে, দেশের বাইরে পলাতক মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকার এক শীর্ষ সন্ত্রাসীর হয়ে চাঁদাবাজি করতেন শিরু। চাঁদাবাজির এসব টাকা মাঝেমধ্যে বসকে না দিয়ে তিনি আত্মসাৎ করতেন। সর্বশেষ ওই শীর্ষ সন্ত্রাসীর নামে একজনের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেও তা বসকে জানাননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তার বস বিদেশে বসেই অনলাইনে শিরুকে হত্যার নির্দেশ দেন। সেই বসের নির্দেশে আট শিষ্য শিরুকে বাসা থেকে ডেকে এনে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে। এসব বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, ঘটনা ঘটছে। মামলা হচ্ছে। আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। অপরাধ করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর