সোমবার, ২ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

আবুল হাসনাত আর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

আবুল হাসনাত আর নেই

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সদস্য, সাহিত্য পত্রিকা ‘কালি ও কলম’ সম্পাদক ও বাংলা একাডেমির ফেলো আবুল হাসনাত আর নেই। রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সকাল ৮টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ফুসফুস সংক্রমণে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু ও এক মেয়েসহ অসংখ্য স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে দেশের শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেমে আসে শোকের ছায়া। আবুল হাসনাতের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আরও শোক প্রকাশ করেছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, ছায়ানট সভাপতি সন্জীদা খাতুন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন। এক শোকবার্তায় জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি সাইফুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, আবুল হাসনাতের মৃত্যুতে সাহিত্য ও সাংবাদিকতার অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। তারা শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য গতকাল দুপুরে ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয় ও ছায়ানটে তার মরদেহ নেওয়া হয়। এ সময় ফুলেল শ্রদ্ধায় প্রথিতযশা এই সাহিত্যিক ও সাংবাদিককে শেষ শ্রদ্ধা জানান শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনের মানুষেরা। দুই দফা শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বাদ আসর ধানমন্ডি-৭ এর বায়তুল আমান জামে মসজিদে নামাজে জানাজা শেষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।

১৯৪৫ সালের ১৪ জুলাই পুরান ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন আবুল হাসনাত। তিনি দীর্ঘ ২৪ বছর দৈনিক সংবাদের সাহিত্য সাময়িকীর সম্পাদক ছিলেন। তার নেতৃত্বে কালি ও কলম এবং বেঙ্গল বই প্রকাশনা জগতে বিশেষ স্থান অর্জন করেছে। তিনি চিত্রকলা বিষয়ক ত্রৈমাসিক ‘শিল্প ও শিল্পী’রও সম্পাদক ছিলেন। ছায়ানটের একজন সংগঠক হিসেবে দেশে প্রগতিশীল আন্দোলনেও ভূমিকা রেখেছেন। তিনি মাহমুদ আল জামান নামেও লেখালেখি করেছেন।

তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘জ্যোৎস্না ও দুর্বিপাক, ‘কোনো একদিন ভুবনডাঙায়’, ‘ভুবনডাঙার মেঘ ও নধর কালো বেড়াল’। শিশু ও কিশোরদের নিয়ে রচিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘ইস্টিমার সিটি দিয়ে যায়’, ‘টুকু ও সমুদ্রের গল্প’, ‘যুদ্ধদিনের ধূসর দুপুরে’, ‘রানুর দুঃখ-ভালোবাসা’। তার উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধগ্রন্থ হলো সতীনাথ, মানিক, রবিশঙ্কর ও অন্যান্য, জয়নুল, কামরুল, সফিউদ্দীন ও অন্যান্য।

টুকু ও সমুদ্রের গল্পের জন্য ১৯৮২ সালে তিনি অগ্রণী ব্যাংক শিশু সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। এ ছাড়া ২০১৪ সালে অর্জন করেছেন বাংলা একাডেমির সম্মানসূচক ফেলো।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর