বুধবার, ৪ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও কিশোর গ্যাং!

জড়াচ্ছে মাদক, অস্ত্র বিক্রিসহ নানা অপরাধে

বাইজিদ ইমন, চবি

সারা দেশের মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও বেড়েছে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য। শাখা ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষের সময়ও তাদের বিভিন্ন স্থানে সশস্ত্র মহড়া দিতে দেখা গেছে। বর্তমানে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় একক আধিপত্যে তারা। বেড়েছে কিশোর অপরাধ। মাদক সেবন ও লেনদেনও করছে তারা। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ১৫টির বেশি কিশোর গ্যাং রয়েছে। প্রতিটি গ্যাংয়ে ১৫-২০ জন করে সদস্য রয়েছে। যাদের বয়স ১৪ থেকে ২০ এর মধ্যে। কলেজের শিক্ষার্থীরা কলেজ এক্সপ্রেস (সিএক্স), চেতনা ৭১, মাইন্ড অব সেভেন্টি ওয়ানসহ স্থানীয় কয়েকটি গ্যাংয়ে বিভক্ত। জানা যায়, এসব গ্রুপে প্রায় তিন শতাধিক সদস্য রয়েছে। এরা ক্যাম্পাসে দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালানো, উচ্চশব্দে গান গাওয়া, মেয়েদের বাজে অঙ্গভঙ্গি এবং বড়দের সঙ্গে বেয়াদবিমূলক আচরণ করে বলে অভিযোগ সচেতন মহলের। তাদের দাবি, তথাকথিত বড়দের দ্বারা পরিচালিত এসব গ্রুপ দিন দিন গ্যাংয়ে পরিণত হচ্ছে। এ ছাড়া মাদকেও এদের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ৪ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র দুই নম্বর গেট এলাকায় সিএক্স এবং স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনার জেরে ৮ সেপ্টেম্বর দুই পক্ষে ফের সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। এতে মামুন নামে এক কলেজছাত্র আহত হয়। গত আট মাসে এরকম ১০টিরও বেশি সংঘর্ষের খবর মিলেছে। অভিযোগ উঠেছে, এসব কিশোর মাদক আদান-প্রদানের সঙ্গে জড়িত। ক্যাম্পাসে রাতের বেলা প্রায় জায়গায় বসে গাঁজার আসর। কিছু জায়গায় বসে ইয়াবার আসর। গত ৫ মে চবির টেলিটক পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে মাদকের আস্তানা থেকে হাতেনাতে ৪৪ পিস ইয়াবা ও ২টি চাপাতিসহ ২ কর্মচারী ও ১ দোকানিকে আটক করেছে প্রশাসন।

এর আগে গত বছরের ১ জুলাই ল্যাবরেটরি স্কুলে পরীক্ষা চলাকালীন একটি ব্যাগ থেকে ৪ পিস ইয়াবা এবং একটি মোবাইল পাওয়া গিয়েছিল।

চবি ক্রিমিনোলজি পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সাবেক সভাপতি ও উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বর্তমান বাংলাদেশে যেভাবে কিশোর অপরাধী বা কিশোর গ্যাং সংস্কৃতি প্রচার ও প্রসার লাভ করেছে তার পেছনে বড় কারণ হচ্ছে মাদক সেবন ও অস্ত্রের ক্রয়-বিক্রয়ের অপব্যবহার। এদের মধ্যে অনৈতিক ও আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে স্বল্প সময়ের মধ্যে বিত্তশালী-উচ্চাভিলাষ হওয়ার প্রবণতাও রয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও এর প্রাধান্য পেয়েছে।

চবি পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো. দুলাল বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। এরকম দেখলে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করি।

সর্বশেষ খবর