বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনা সংক্রমণের সঙ্গে ডেঙ্গুর শঙ্কা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

করোনা সংক্রমণের সঙ্গে ডেঙ্গুর শঙ্কা

চট্টগ্রামে প্রতিদিনই নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। করোনার আতঙ্ক-শঙ্কা কাটেনি এখনো। এখন করোনার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালসহ বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন অনেকেই। ফলে নগরবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। তবে গতকাল থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) মশক নিধনকার্যক্রম উদ্বোধন করে। সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ৭৬৩টি নমুনা পরীক্ষা করে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৮০ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত হন ২১ হাজার ৪৫৮ জন। চট্টগ্রামে ইতিমধ্যে মারা গেছেন ৩০৬ জন। জানা যায়, করোনার ডামাডোলের মধ্যেই চলতি বছর চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দুজন মারা যান। তাছাড়া করোনার মধ্যে গত ২৯ অক্টোবর চমেক হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত এক রোগী ভর্তি হয়েছিলেন। গত দুই মাসে কয়েকজন রোগী ডেঙ্গুর উপসর্গ নিয়ে চমেক হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। একই সঙ্গে জেনারেল হাসপাতালেও ডেঙ্গু আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে আসা অনেক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। অন্যদিকে, জুন, জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাস ডেঙ্গুর মৌসুম। মৌসুম শেষ হলেও জলাবদ্ধতা নিরসনসহ নানা কারণে নগরীর প্রধান খাল-নালাগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা পানিতে বংশ বিস্তার করেছে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা। চসিক প্রশাসক খোরশেদুল আলম সুজন বলেন, ‘মশার প্রকোপ ও এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করতে গতকাল থেকে নগরের খালগুলো পরিষ্কার করার কাজ শুরু হয়েছে। বির্জা খাল পরিষ্কার ও মশক নিধনের ওষুধ ছিটানোর মাধ্যমে এডিস মশা ধ্বংসের কাজ শুরু করছি।’ চমেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলাম বলেন, ‘করোনা আতঙ্কে মানুষের মধ্যে ডেঙ্গুর শঙ্কা যোগ হয়েছে। ডেঙ্গু নিয়ে কয়েকজন হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এখন মাঝে মাঝে বৃষ্টি হওয়ায় পানি জমে থেকে এডিস মশার প্রজনন বাড়ার আশঙ্কা আছে। এ ব্যাপারে সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্ক এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।’ চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘করোনার মধ্যে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় উপজেলাগুলোতে কিটসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। নগরে মশা মারার ওষুধ ছিটানোর জন্য চসিককে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মশা নিয়ন্ত্রণে কেবল কীটনাশক নিয়ে চিন্তা করলে হবে না। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীর আবহাওয়া যেভাবে উষ্ণ হচ্ছে, বৃষ্টির মৌসুম যেভাবে পরিবর্তন হচ্ছে, তার সঙ্গে এডিস মশাসহ নানা কীটপতঙ্গ বেড়ে যাওয়ার একটি গভীর সম্পর্ক আছে। এসব পরিবর্তন সম্পর্কে দূরদর্শী হতে হবে। কারণ বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে উষ্ণমন্ডলীয় এবং অবউষ্ণম-লীয় পোকামাকড়ের প্রাদুর্ভাব ধীরে ধীরে বাড়ছে। গরমের সময়টা যদি দীর্ঘ হয়, তাহলে মশা বা কীটের জীবনকালে পরিবর্তন আসে। তার প্রজননকালীন সময় দীর্ঘ হচ্ছে। তাছাড়া ইদানীং বৃষ্টিপাত অনেক আগেই শুরু হয়। বর্ষা যত দীর্ঘ হচ্ছে মশার প্রজননকালীন সময় ব্যাপক দীর্ঘ হচ্ছে। তারা আরও বেশি প্রজনন সক্ষম হয়ে ওঠছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর