শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

দরিদ্র পরিবারের শিশুরাই ধর্ষকদের টার্গেট!

খুলনায় ভয়াবহ আকারে বেড়েছে ধর্ষণ নির্যাতন

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে খুলনায় মাদ্রাসাছাত্রীসহ চারজন ধর্ষিত হয়েছেন। এর মধ্যে ১২ বছরের এক ছাত্রীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন অবস্থায় ধর্ষণ করা হয়। আরেক ছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণের ফলে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। অপরাধ বিশেষজ্ঞদের দাবি, সহজলভ্য অশ্লীল ভিডিও ও ইন্টারনেটের অপব্যবহারের কারণে সমাজে ধর্ষণপ্রবণতা বাড়ছে। আর এ ক্ষেত্রে দরিদ্র পরিবারের নিরাপত্তাহীন শিশুরাই শিকার হচ্ছে ধর্ষকদের। জানা যায়, খুলনায় প্রতি মাসে গড়ে ২০টির বেশি নারী ও শিশু নির্যাতন ঘটছে। যার মধ্যে উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে শিশু ধর্ষণ। ৩ অক্টোবর খুলনার বটিয়াঘাটায় ধর্ষণের শিকার এক মাদ্রাসাছাত্রীর (১২) অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়। বাবা-মায়ের সম্পর্ক ছেদ হওয়ায় শিশুটি তার দাদির কাছে থাকত। বিভিন্ন সময় খাবারের লোভ, টাকা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে অজিয়ার মোল্লা (৪০) নামে এক ব্যক্তি তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন। স্থানীয় যুবকরা অজিয়ারকে মারধর করে পুলিশে দিয়েছে। ৩১ অক্টোবর বটিয়াঘাটার সুকদাড়া এলাকায় বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে আরেক মাদ্রাসাছাত্রীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ধর্ষণ করেন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক সঞ্জয় শীল (৫০)।

একইভাবে ২৭ অক্টোবর খুলনা মহানগরীর মুজগুন্নিতে দুই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অযোগে হিরু মিয়া (৫০) নামে এক মাহেন্দ্রচালককে গ্রেফতার করে পুলিশ। দরিদ্র পরিবারের এসব শিশুকেও খাবারের লোভ ও বাবা-মায়ের অনুপস্থিতিতে ভয়ভীতি দেখিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করা হয়।

খুলনা সরকারি সুন্দরবন কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক প্রকাশচন্দ্র অধিকারী মনে করেন সহজলভ্য অশ্লীল ভিডিও ও বিকৃত মানসিক ভাবধারা এসব ঘটনার জন্য দায়ী। তিনি বলেন, বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের কারণে বিশেষ করে মেয়েশিশুরা নিরাপত্তাহীনতায় থাকে। অসহায় দরিদ্র পরিবারের এসব শিশু ধর্ষকদের টার্গেট হয়ে থাকে।

বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা, খুলনার সমন্বয়কারী অপরাধ বিশ্লেষক অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম বলেন, নানা কারণে সামাজিক-পারিবারিক বন্ধন ভেঙে গেছে। সেই সঙ্গে বিচারহীনতা, ভয়ের সংস্কৃতি ও ধর্মীয় অনুশাসনের প্রতি অবহেলায় ধর্ষণ অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। এখন যারা অপরাধী, তারাও জানে তাদের কিছু হবে না। তাই তারাও নিবৃত্ত হয় না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর