শনিবার, ৭ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ওসমানী উদ্যানের করুণ দশা

১০ মাসের সংস্কার শেষ হয়নি আড়াই বছরেও

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

১০ মাসের মধ্যে রাজধানীর ওসমানী উদ্যান পার্কটির সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি আড়াই বছরেও। পাশাপাশি উদ্যান সংস্কারে খরচ বেড়েছে প্রায় দিগুণ। নগরভবন সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ২৭ জানুয়ারি ওসমানী উদ্যান পার্কটির সংস্কার কাজ উদ্বোধন করেন তৎকালীন ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র সাঈদ খোকন। এ সময় মেয়র জানিয়েছিলেন ৯ থেকে ১০ মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে। ইতিমধ্যে আড়াই বছর পার হলেও সংস্কার কাজ শেষ হয়নি। কি পরিমাণ কাজ শেষ হয়েছে তাও স্পষ্ট বলতে পারেন না সংশ্লিষ্টরা। এদিকে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন প্রাতভ্রমণকারীরা। পার্কটিতে প্রথমে ৫৮ কোটি টাকা প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়। এই ব্যয় পরে তা কয়েক দফা বাড়ানো হয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, উন্নয়ন কাজ চলছে এমন সাইনবোর্ড দিয়ে পুরো পার্ক টিন দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। ভিতরে কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। নগরভবন ও সচিবালয়ের মাঝখানে অবস্থান ওসমানী উদ্যানের। মূলত পুরান ও নতুন ঢাকাকে সংযুক্ত করেছে উদ্যানটি। জানা যায়, অবিভক্ত         ঢাকা সিটি মেয়র সাদেক হোসেন খোকা ২০০৪-০৬ সালের মধ্যে ওসমানী উদ্যানের উন্নয়ন করেছিলেন। তখন উদ্যানের চারপাশে মজবুত সীমানা প্রাচীর ও ভিতরে ওয়াকওয়ে তৈরি করা হয়। পাশাপাশি নির্মাণ করা হয় মুক্তিযুদ্ধের ১০টি সেক্টরের পরিচিতি সংবলিত একেকটি ফলক। কিন্তু অযত্ন অবহেলায় দিন দিন খারাপ হতে থাকে উদ্যানের পরিবেশ। এ জন্য ‘জল সবুজে ঢাকা’ প্রকল্পের আওতায় ওসমানী উদ্যানের আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেন সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। নগরভবন সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে উদ্যানের ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ডিসেম্বর নাগাদ উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। কাজের ধীরগতির কারণে আগামী ডিসেম্বরেও উন্মুক্ত করা সম্ভব হবে না। ওসমানী উদ্যানে ২৯ একর জায়গার ওপর এ পার্ক নির্মাণ করার কথা বলা রয়েছে। পার্কটিতে মিউজিক সিস্টেম, বসার জন্য আলাদা জোন, বাচ্চাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা এবং বড় স্ক্রিনে টেলিভিশন দেখার সুবিধা থাকবে। উদ্যানের লেকটিকে আরও দৃষ্টিনন্দন করা হবে। থাকবে প্যাডেল বোট। ফুড কোর্ট, ভলিবল ও ক্রিকেট খেলার ব্যবস্থা। পার্কে বাজবে হারানো দিনের গান। বিস্তর ওয়াকওয়েতে হেঁটে ক্লান্ত পথিকরা হাতের নাগালে পাবেন বিনামূল্যে সুপেয় পানি। থাকবে জিম ও ইয়োগার ব্যবস্থা। পুরান ঢাকার ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে থাকবে নগর মিউজিয়ামে নানা উপকরণ। অভ্যন্তরীণ ড্রেনেজ সিস্টেম ও বিদ্যুতায়নে পুরো পার্কে থাকবে আলোর ঝলকানি। এ ছাড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় থাকবে ৩৫০টিরও বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা।

এসব পরিকল্পনা নিয়েই কাজ শুরু হয় পার্কটির। এ ছাড়া নতুন করে প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয় চলতি বছরের জুন পর্যন্ত। এরপর আবারও পানি নিষ্কাশন, পানি ব্যবস্থাপনা ও পরিশোধন যোগ করে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ১০০ কোটি টাকার ওপর। পার্কটির কাজ করছে ‘দি বিল্ডার্স লিমিটেড’। এ বিষয়ে দায়িত্বে থাকা অঞ্চল-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম জয় জানান, কতভাগ কাজ শেষ হয়েছে সেটি কাগজপত্র দেখা ছাড়া বলতে পারব না। পরিকল্পনা আছে ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারব।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর