রবিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

তিস্তায় ৩৩ বছরে শুষ্ক মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ পানি

প্রয়োজন ৩ হাজার, মিলছে ১২ হাজার কিউসেক

নজরুল মৃধা, রংপুর

তিস্তায় গত ৩৩ বছরের মধ্যে শুষ্ক মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ পানি প্রবাহিত হচ্ছে। নভেম্বরের শুরু থেকে প্রতিদিন গড়ে ১২ হাজার কিউসেক পানি পাওয়া যাচ্ছে। অন্যান্য বছর এ সময় পানির জন্য হাহাকার থাকলেও এবারের চিত্র ভিন্ন। শুষ্ক মৌসুমে গড়ে ৩ হাজার কিউসেক পানির প্রয়োজন থাকলেও এবার পাওয়া যাচ্ছে প্রায় ৪ গুণ বেশি। অসময়ে এত বেশি পানি প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক কর্মকর্তা।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, ডালিয়া পয়েন্ট থেকে ১০০ কিলোমিটার উজানে ভারত ১৯৮৭ সালে গজলডোবায় বাঁধ নির্মাণ করে তিস্তার স্বাভাবিক গতিপথ রোধ করে। এর পর থেকে তিস্তা অববাহিকায় নেমে আসে ঘোর অমানিশা। নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত শুষ্ক মৌসুমে পানির জন্য হাহাকার ওঠে। নদীর স্বাভাবিক গতি ঠিক রাখতে প্রতিদিন                এ সময় পানির দরকার হয় তিন হাজার কিউসেক। কিন্তু সেখানে পানি পাওয়া যেত ৩০০ থেকে ৫০০ কিউসেক। কিন্তু এবারের চিত্র পাল্টে গেছে। এবার পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি থাকায় সেচখালগুলোও সজীব রয়েছে। সেচখাল থেকে পানি নিয়ে কৃষকরা এখনো জমিতে সেচ দিচ্ছেন। জানা গেছে, তিস্তার পানি নিয়ে ২০০৫ সালে সর্বশেষ জিআরসির মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এর পর ২০০৬ সালে বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও ভারত সরকারের আগ্রহ না থাকার কারণে বৈঠকটি হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বৈঠকের প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তবে এবার ভারত সরকারের উদারতায় প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি পানি পাওয়া যাচ্ছে। আশার কথা, তিস্তা ঘিরে সাড়ে ৮ হাজার টাকার মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে তিস্তাপাড়ের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হবে।

ডালিয়া পয়েন্টের নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) সামছুজ্জোহা ও রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক কর্মকর্তা উপসহকারী প্রকৌশলী আমিনুর রহমান জানান, শুষ্ক মৌসুমে গড়ে ৩ হাজার কিউসেক পানির প্রয়োজন থাকলেও এবার বেশ কিছুদিন থেকে ১২ হাজার কিউসেক পানি পাওয়া যাচ্ছে। এটা তিস্তার দুই পাড়ের মানুষের জন্য কল্যাণকর।

সর্বশেষ খবর