বুধবার, ১১ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

চিকিৎসাসেবার আড়ালে মাদক ব্যবসা!

খুলনায় সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকসহ দুজনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

চিকিৎসাসেবার আড়ালে মাদক ব্যবসা!

খুলনায় চিকিৎসাসেবার আড়ালে রমরমা মাদক ব্যবসার প্রমাণ পেয়েছে প্রশাসন। নগরীর ছোট বয়রা এলাকায় বেসরকারি ক্লিনিক খুলনা হেলথ গার্ডেনে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা, গাঁজা, নগদ টাকা ও ইয়াবা সেবনের সরঞ্জামাদি উদ্ধার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। এ ঘটনায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সদ্য বদলিকৃত মেডিকেল অফিসার (মেডিসিন) ডা. সুমন রায় (৪০) ও তার সহযোগী আসাদুজ্জামান হীরা (৪১)’র বিরুদ্ধে সোনাডাঙ্গা থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে। গতকাল গ্রেফতার হওয়া আসাদুজ্জামান হীরাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে সুমন রায় পলাতক রয়েছেন। তিনি নগরীর বাগমারা মেইন রোডের (বাগমারা ব্যাংকার্স লেন-১) হিরণময় রায়ের ছেলে। জানা যায়, বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবার আড়ালে মাদক ব্যবসার অভিযোগে জেলা প্রশাসন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর সোমবার রাতে হেলথ গার্ডেন ক্লিনিকে অভিযান চালায়। এসময় ক্লিনিকের দ্বিতীয় তলায় ডা. সুমন রায়ের ব্যক্তিগত চেম্বার ‘ডক্টরস্ ক্লাব’র ভিতরে প্লাস্টিকের কৌটায় ৩৩টি পলি প্যাকেটে থাকা ১ হাজার ৬৫০ পিস ইয়াবা, ৫০ গ্রাম গাঁজা ও ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা উদ্ধার হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ডা. সুমনের সহযোগী আসাদুজ্জামান হীরা ও অথৈ নামে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। তবে সুমন রায় সেখানে ছিলেন না। মামলার বাদি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ‘খ’ সার্কেল, খুলনার পরিদর্শক আতাউর রহমান জানান, আসামিরা পরস্পরের সহযোগিতায় বিক্রির উদ্দেশে অবৈধ মাদক অ্যামফিটামিনযুক্ত ইয়াবা ট্যাবলেট ও গাঁজা সংরক্ষণ করেছিল। অভিযানে চেম্বারের একটি কক্ষ থেকে ইয়াবা ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান ও আরেকটি কক্ষে অথৈ নামে এক তরুণীকে গাঁজা সেবনরত অবস্থায় পাওয়া যায়। অথৈ নিজেকে ডা. সুমনের ব্যক্তিগত সহকারী বলে পরিচয় দেয়। গাঁজা সেবনের অপরাধে তাকে সাত মাসের কারাদ  দেওয়া হয়েছে।  জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম রাসেল ইসলাম নূর জানান, সুমন রায়ের কক্ষ থেকে ইয়াবা ও গাঁজার পাশাপাশি মাদক সেবনের সরঞ্জামাদি (অসংখ্য ২ টাকার নোট ও কয়েন) উদ্ধার হয়েছে। তিনি নিজে মাদক সেবনসহ এখানে নিয়মিত মাদকের আড্ডা বসাতো বলে জানা গেছে। এ কারণে কক্ষটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। এদিকে সুমন রায় এই ক্লিনিকের একাংশের মালিক বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। তবে ক্লিনিকের মূল মালিক খন্দকার আহসানউল্লাহ বলেন, সুমন রায়ের ক্লিনিকে মালিকানার কোনো অংশীদারিত্ব নেই, তাকে ক্লিনিকের কাজের অংশীদারিত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই ক্লিনিকে তার নিজস্ব চেম্বার থেকে ইয়াবাগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। আর ঘটনাস্থল থেকে যে ২ জনকে আটক করা হয়েছে তারা ক্লিনিকের স্টাফ নয়। তারা সুমন রায়ের ব্যক্তিগত সহকারী। উল্লেখ, সুমন রায় স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের খুলনা জেলা শাখার যুগ্ম সম্পাদক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) খুলনা জেলা শাখার প্রচার ও জনসংযোগ সম্পাদক এবং বিএমএ কেন্দ্রীয় কাউন্সিলর।

সর্বশেষ খবর