বুধবার, ১১ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

তদন্ত হয়, বাস্তবায়ন হয় না সুপারিশ

চট্টগ্রামে গ্যাসলাইন বিস্ফোরণ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে ঝুঁকিপূর্ণ গ্যাসলাইনে প্রায়ই দুর্ঘটনা হয়। দুর্ঘটনা তদন্তে কমিটিও হয়। কমিটির সুপারিশ হয়। কিন্তু বাস্তবায়ন হয় না অধিকাংশ সুপারিশই। ফাইলবন্দী থেকে যায় সুপারিশগুলো। ফলে ঘটছে দুর্ঘটনা, বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। জানা যায়, গত বছরের ১৭ নভেম্বর চট্টগ্রাম নগরের পাথরঘাটার ব্রিকফিল্ড রোডের বড়ুয়া ভবনে গ্যাসের রাইজার ভয়াবহ বিস্ফোরণে সাতজনের মৃত্যু ও ১০ জন আহত হন। এ ঘটনায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি নগরের গ্যাসের ঝুঁকিপূর্ণ লাইন ও রাইজারগুলো নিয়মিত বিরতিতে পরীক্ষা করা, সিডিএ অনুমোদিত নকশা বহির্ভূতভাবে নির্মিত ভবন দ্রুত পরিদর্শন করাসহ পাঁচটি সুপারিশ করে। কিন্তু গ্যাস নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন না করার অভিযোগ ওঠে। সর্বশেষ গত রবিবার রাতে নগরের আকবর শাহ থানাধীন উত্তর কাট্টলি মরিয়ম ভবনে গ্যাসলাইন বিস্ফোরণে একই পরিবারের সাত জনসহ ৯ জন দগ্ধ হয়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন একজনের মৃত্যু হয় ও ছয়জনকে উন্নত চিকিৎসায় ঢাকা নেওয়া হয়। এ ঘটনায় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

 এ কমিটি গতকাল সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। কেজিডিসিএলের অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস) প্রকৌশলী মো. সারওয়ার হোসেন বলেন, ‘কাট্টলির ঘটনাটি গ্যাসলাইন থেকে হয়নি। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। তবে নগরের ঝুঁকিপূর্ণ গ্যাস লাইন ও রাইজার মেরামতে ১৬টি টিম কাজ করছে। 

কেজিডিসিএল সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে নগরে ৫ লাখ ৯৭ হাজার ৯৮৫টি আবাসিক সংযোগ আছে। এ সব সংযোগে ২ হাজার ৮০০ কিলোমিটার সরবরাহ লাইন আছে। গ্যাস সরবরাহ, সংযোগ ও নিয়ন্ত্রণে আছে প্রায় ১ লাখ ৪৫ হাজার রাইজার। পাথরঘাটার দুর্ঘটনার পর গ্যাসের রাইজারগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার উদ্যোগ নেয়। এ কাজে পরীক্ষায় শতাধিক প্রকৌশলী ও ৪০ জন মেরামত কর্মীর সমন্বয়ে এলাকাভিত্তিক টিম গঠন করা হয়েছিল।

কেজিডিসিএলের অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস) প্রকৌশলী মো. সারওয়ার হোসেন বলেন, ‘তদন্ত টিম ঘটনা সংশ্লিষ্ট স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছে। তদন্তে দুটি বিষয় শনাক্ত হয়। প্রথম পার্শ্ববর্তী বাসার চুলায় গরম পানি ফুটাচ্ছিল। পরে পানি সিদ্ধ হয়ে চুলা বন্ধ হয়ে গেলেও গ্যাস বন্ধ হয়নি। দ্বিতীয়ত- পার্শ্ববর্তী বাসায় একটি গ্যাস সিলিন্ডার ছিল। ওই সিলিন্ডারটি উদ্ধার করে সেটাতে গ্যাস আছে কিনা তা পরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে পুরো বিষয়টি তদন্তের পর জানা যাবে।’

সর্বশেষ খবর