রবিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

মেয়র প্রার্থী হতে নগর ছেড়ে ভোটার হলেন পৌর এলাকায়

ক্ষোভ বিরাজ করছে নেতা-কর্মীদের মধ্যে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

পৌরসভায় মেয়র প্রার্থী হতে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা আবুল বাশার সুজন। তিনি রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানা (পশ্চিম) আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। নগরীর ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার ছিলেন তিনি। তানোর এলাকায় তার কোনো স্বজন নেই। কিন্তু হঠাৎ করেই তিনি নগরী থেকে নিজের নাম বাদ দিয়ে ভোটার হয়েছেন তানোর উপজেলা সদরের। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে আবুল বাশার সুজন বলেন, ‘তানোর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের শক্ত প্রার্থী নেই। দীর্ঘদিন ধরে সেখানে বিএনপির প্রার্থী বিজয়ী হয়ে আসছেন। তাই আগামীতে মেয়র প্রার্থী হতে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করেছি। দল মনোনয়ন দিলে তানোর পৌরসভায় নির্বাচন করতে চাই।’ স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জানান, গত পৌরসভা নির্বাচনে এ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমরুল হক। তিনি মাত্র ১৩ ভোটের ব্যবধানে বিএনপি প্রার্থী মিজানুর রহমানের কাছে পরাজিত হন। সেই হিসেবে এবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ইমরুলকেই চান অধিকাংশ নেতা-কর্মী। কিন্তু হঠাৎ করে এমপি ফারুক চৌধুরী আবুল বাসার সুজনের নাম ঘোষণা করায় ক্ষোভ বিরাজ করছে নেতা-কর্মীদের মধ্যে।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, তানোর উপজেলার চাপড়া এলাকার ভোটার হতে আবেদন করেছিলেন আবুল বাশার সুজন। সব প্রক্রিয়া শেষ করে ইতিমধ্যে তাকে ওই এলাকার ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, যেকোনো নাগরিক তার ভোটার এলাকা পরিবর্তনের আবেদন করতে পারেন। এর জন্য কিছু নিয়মকানুন ও শর্ত আছে। সেগুলো পূরণ হলেই ভোটার এলাকা পরিবর্তন করা যাবে। ওই ব্যক্তি নিশ্চয়ই সব শর্ত পূরণ     করেছেন বলেই ভোটার এলাকা বদল করতে পেরেছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ নেতা আবুল বাশার সুজন যে এলাকার ভোটার হয়েছেন, সেখানে তার কোনো স্বজন বা বাড়িঘর নেই। তানোর উপজেলায় তার নেওয়া হাটগুলোর দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করা চাপড়া এলাকায় আয়েন উদ্দিনের বাড়ি দেখিয়ে তিনি ভোটার হয়েছেন।

আয়েন উদ্দিন তানোর পৌরসভা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক। এরপর চাপড়া এলাকায় জমি কিনে বাড়ি করেছেন সুজন। স্থানীয়রা জানান, স্থানীয় এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর কাছ থেকে তার মেয়র পদের দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি চাপড়া গ্রামের ভোটার হয়েছেন। গত ১০ মাস ধরে তিনি এলাকায় বিপুল পরিমাণ ব্যানার-ফেস্টুন টানিয়েছেন। মেয়র প্রার্থী হিসেবে দোয়াও চেয়েছেন।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দীর্ঘদিন ধরে যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে আসছেন, তাদের মূল্যায়ন না করে বাইর থেকে নেতা আনা হয়েছে। এতে করে এলাকার উন্নয়ন হবে না। দলও সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হবে।

তবে এমপি ফারুক চৌধুরী বলেন, ‘যে কেউ ভোটার এলাকা বদল করতেই পারেন। সেটি মানুষের ব্যক্তিগত ইচ্ছা। কাকে মনোনয়ন দেবে, সেটি দলের বিষয়। ভোটার এলাকা বদল করলেই তো কেউ প্রার্থী হয়ে যাবেন বা মনোনয়ন পাবেন, সে নিশ্চয়তা নেই।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর