সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমেদ হত্যাকান্ডের দিন তার বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগকারী সাইদুল শেখকে প্রতারণার মামলায় রিমান্ডে নিয়েছে পিবিআই। গতকাল দুপুরে তাকে সিএমএম কোর্টের বিচারক সাইফুর রহমানের আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেটের পুলিশ সুপার মো. খালেদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত ২৫ অক্টোবর সাইদুল শেখকে ৫৪ ধারায় আটক করে পিবিআই। এরপর তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা দায়ের করেন আফজাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি। গত ১৩ অক্টোবর সৌদি রিয়াল বিক্রি করার কথা বলে এক লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে একটি প্যাকেট দেন সাইদুল। কিন্তু পরে ওই প্যাকেটে পেপারে মোড়ানো সাবান দেখতে পান আফজাল।
প্রতারিত হয়ে মামলা করেন তিনি। ওই মামলায় সাইদুলকে রিমান্ডে নিয়েছে পিবিআই।
প্রসঙ্গত, বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে গত ১০ অক্টোবর রাতে ধরে নেওয়া হয় নগরীর নেহারীপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে রায়হান আহমদকে। পরদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন ফাঁড়ির এএসআই আশেকে এলাহী। প্রথমে ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে রায়হান মারা গেছে বলে দাবি করে পুলিশ। কিন্তু তার পরিবারের পক্ষ থেকে ফাঁড়িতে নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ উঠলে মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পেয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিন সদস্যকে প্রত্যাহার করে। রায়হানের স্ত্রীও হত্যা এবং হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে থানায় মামলা করেন। ঘটনার পরপরই গা ঢাকা দেন এসআই আকবর। দীর্ঘ ২৯ দিন পর গত ৯ নভেম্বর ভারতে পালানোর সময় সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আকবর বর্তমানে পিবিআইয়ের অধীনে সাত দিনের রিমান্ডে আছেন। রায়হান হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই।
