সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

পরিচালক ফাতেমা রিমান্ডে দুই কর্মচারীর দায় স্বীকার

এএসপি আনিসুল হত্যা

আদালত প্রতিবেদক

জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিম হত্যা মামলায় রাজধানীর আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালের পরিচালক ফাতেমা খাতুনকে চার দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী রিমান্ডের এ আদেশ দেন। এদিকে হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় ওয়াসিম চন্দ্র পাল ও শেফ (বাবুর্চি) মাসুদ খান ঘটনার কথা স্বীকার করে আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ বিষয়ে আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) এসআই মনিরুজ্জামান মন্ডল সাংবাদিকদের জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ফারুক মোল্লা আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এ আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। এর আগে ১২ নভেম্বর ফাতেমা খাতুনকে গ্রেফতারের পর আদাবর থানায় নেওয়া হয়। আগে থেকে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত। থানা হেফাজতে থাকাকালীন ১৩ নভেম্বর ১২টা ১০ মিনিটের দিকে বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাকে চিকিৎসার জন্য জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে নেওয়া হয়। গ্রেফতারের পর আসামি ফাতেমা অসুস্থ হওয়ার কারণে সেই দিন আদালতে হাজির করা সম্ভব হয়নি। তবে বিষয়টি আদালতকে অবহিত করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। পরে আসামিকে আদালতে হাজির করতে হাজতি পরোয়ানা ইস্যুর আবেদন করা হয়। চিকিৎসা শেষে সুস্থতা সাপেক্ষে আসামিকে আদালতে সোপর্দ করার আদেশ দেন বিচারক। এর আগে মঙ্গলবার হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়সহ ১০ জন আসামিকে সাত দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেন আদালত।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিম মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। এ কারণে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পরিবারের লোকজন তাকে নিয়ে মাইন্ড এইড হাসপাতালে যান। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় আনিসুলকে নিয়ে অন্য স্থানে চিকিৎসার জন্য আলোচনা করেন পরিবারের সদস্যরা। পরে জোর করে আসামিরা ভর্তির ফরম পূরণ করে এবং কয়েকজন কর্মচারী আনিসুলকে দোতলায় নিয়ে যান। পরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। এর কিছুক্ষণ পর তাদের জানানো হয় আনিসুল অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন। এরপর তারা তাকে হৃদ?রোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় সোমবার রাতে নিহতের বাবা বাদী হয়ে আদাবর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, হাসপাতালটিতে চিকিৎসাসেবার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ নেই। কিন্তু সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকার পরও আসামিরা জোর করে ভর্তির ফরম পূরণ করেন এবং কয়েকজন কর্মচারী আনিসুলকে দোতলায় নিয়ে যান। পরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর