মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রগুলো বিক্রি করার কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাই কোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে। গতকাল হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি দাখিল করা হয়। বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী। গত ৫ অক্টোবর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘মুক্তিযুদ্ধের অস্ত্র বেচতে চায় সরকার’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদনটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান (পান্না) ও মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র। রিটের পক্ষের আইনজীবী শাহীনুজ্জামান, সৈয়দা নাসরিন ও লাবণী আক্তার জানান, আবেদনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ সচিব, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সচিব এবং বাণিজ্য সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।

আইনজীবীরা আরও জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহার করা অস্ত্র বিক্রি/আগ্নেয়াস্ত্র স্থানান্তর কার্যক্রম কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, জাতীয় ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অবিলম্বে ওইসব অস্ত্র সংরক্ষণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং ওইসব অস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর বা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কোনো সংগঠনের কাছে হস্তান্তরের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। এ ছাড়া রুল বিবেচনাধীন থাকায় অবস্থায় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত অস্ত্র বিক্রি ও স্থানান্তরে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে আবেদনে।

রপ্তানি করতে চাওয়া পুরনো অস্ত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাজ্যে তৈরি ০.৩০৩ রাইফেল নম্বর-৪ এমকে-১, ৯ এমএম স্টেন এসএমজি এমকে-২ ও সিএম ৯ এমএম স্টেন এ১, ভারতে তৈরি ৭.৬২ এমএম এসটিআর এল১ এ১/১ এ ১ ও রাইফেল জি-৩, পাকিস্তানে তৈরি ৪৪ এমএম হ্যান্ড লঞ্চার এম-৫৭, যুক্তরাষ্ট্র/রাশিয়া/জাপানে তৈরি পিস্তল ও রিভলবার ৭০০ এবং জার্মানি/যুক্তরাজ্য/ভারতে তৈরি এলএমজি এইচকে ১১ এ১ সিএএল ৭.৬২ * ৫১।

আট শ্রেণি মিলিয়ে অস্ত্রের মোট সংখ্যা ২৭ হাজার ৬৬২। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৪ হাজার ৪৫৪টি হচ্ছে ০.৩০৩ রাইফেল নম্বর-৪ এমকে-১। আর সবচেয়ে কম ১১৫টি হচ্ছে ৪৪ এমএম হ্যান্ড লঞ্চার এম-৫৭।