মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

রংপুরে সরকারি বালু হরিলুট

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুরে সরকারি বালু হরিলুট

মিঠাপুকুরের দমদমা আঠারোকাঠা এলাকায় ঘাঘট নদ থেকে তোলা সরকারি বালু অবৈধভাবে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে -বাংলাদেশ প্রতিদিন

রংপুরের মিঠাপুকুরের ঘাঘট নদের দমদমা এলাকায় প্রায় তিন কিলোমিটার নদী খনন করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ৬ মাসের মধ্যে খনন করা প্রায় ৩ কোটি টাকা মূল্যের বালু লুটপাট করেছে স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র। এ ছাড়া নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে চক্রটি। মিঠাপুকুরের ১৬টি পয়েন্টে খনন করা বালু নিলাম ডাকের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে বালুগুলো নিলাম দেয়নি প্রশাসন। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে খনন করা পর্যন্ত আমাদের কাজ। নিলাম ডাকের ব্যবস্থা করবে স্থানীয় প্রশাসন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দমদমা আঠারোকাঠা এলাকায় প্রায় তিন কিলোমিটার নদী খনন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। খননের বালুগুলো স্তূপ করে রাখা হয় নদীর পাড়ে। অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের প্রতিনিধি আলম ও পায়রাবন্দ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্পাদক রফিকুল ইসলাম স্তূপ করে রাখা বালুগুলো বিক্রি শুরু করেন। ৬ মাসে প্রায় তিন কোটি টাকা মূল্যের বালু হরিলুট করেছেন তারা। নদীর খনন করা বালু শেষ হলে, নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে পুনরায় বালু উত্তোলন করছেন। প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক ও ট্রাক্টরে বালুগুলো বহন করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। সরেজমিন দেখা গেছে, দমদমা আঠারোকাঠা এলাকায় ড্রাম ট্রাক ও ট্রাক্টরে করে বালুগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নদী খননের বালুগুলো প্রায় শেষ পর্যায়ে। তাই, নতুন করে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। স্থানীয় আকবর আলী বলেন, সরকারি খনন করা বালু উত্তোলন করে রফিকুল মাস্টারের জমিতে রাখা হয়েছিল। এ সুবাদে বালুগুলো রফিকুর ইসলাম মাস্টার ও আলম মিয়া বিক্রি করে দিয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। একজন ট্রাক্টর চালক জানান, প্রায় ৬ মাস ধরে বালুগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রফিকুল মাস্টার ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করেছেন। আমরা ট্রাক্টরে করে সেগুলো নিয়ে যাচ্ছি। স্থানীয় সাইফুল ইসলাম ও মোজাম্মেল হক বলেন, নদী থেকে বালু তোলার ফলে আবাদি জমি ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। প্রভাবশালীরা বালু বিক্রি করে দিচ্ছেন। কেউ ভয়ে বাধা দেওয়ার সাহস পায় না।  পায়রাবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফয়জার রহমান খান বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী খনন করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আলম মিয়া বলেন, আমরা বালুগুলো খনন করে দিয়েছি। পরে বালুগুলো স্থানীয় প্রভাবশালীরা বিক্রি করে দিয়েছে। এর সঙ্গে আমি জড়িত নই। পায়রাবন্দ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্পাদক রফিকুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বালু রাখার জন্য আমার জমি লিজ নিয়েছিল। কে বা কারা বালু বিক্রি করছে তা আমি জানি না।  রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব জানান, নদী খনন করা পর্যন্ত আমাদের কাজ।  নদী থেকে উত্তোলন করা বালু নিলামে বিক্রি করার দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসনের। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুন ভূঁইয়া বলেন, বিষয়টি জানা নেই। তদন্ত করে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর