মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
সংবাদ সম্মেলন

সিলেটে মা-ছেলেকে ভিটে থেকে উচ্ছেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তেতলী ইউনিয়নের টিল্লাবাড়ি এলাকার কাওছার আহমদ ছিলেন সৌদি আরব প্রবাসী। সেখানে এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হন তিনি। কিন্তু আক্রান্তের বিষয়টি টের না পাওয়ায় দেশে ফিরে কাওছার ভালোবাসার সম্পর্কে চাচাতো বোন সেজনা আক্তারকে বিয়ে করেন। পরে শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে যেতে থাকায় নানা পরীক্ষার পর কাওছার এইডসে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হন। কিন্তু ততো দিনে সেজনার গর্ভে আসে সন্তান। এরই মধ্যে ২০১২ সালে মারা যান কাওছার। পরে সেজনা জন্ম দেন এক ছেলে সন্তানের। স্বামী মারা যাওয়ার পর ছেলে আবদুর রহমান ইয়াছিরকে নিয়ে জীবনের কঠিন পথ পাড়ি দিতে থাকেন সেজনা। সিলেটে ও ঢাকায় একাধিকবার পরীক্ষায় ছেলেসহ তিনিও এইডসে আক্রান্ত বলে ধরা পড়েন। সেজনার কঠিন পথ হয়ে পড়ে আরও কঠিনতর। এর মধ্যে প্রয়াত স্বামীর    পরিবারের বিরূপ মনোভাব নতুন বিপদ হিসেবে হাজির হয় সেজনার সামনে। সেজনার অভিযোগ, তার শাশুড়ি, দেবর ও দেবরের স্ত্রী মিলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে তাকে (সেজনা) স্বামীর ভিটে থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। এ অভিযোগ নিয়ে তিনি গতকাল দুপুরে সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় সেজনা বেগম বলেন, ‘দানশীল মানুষের সহযোগিতায় কোনোরকমে বেঁচে আছি আমরা। কিন্তু স্বামীর ভিটে ছাড়া অন্য কোনো অবলম্বন নেই আমাদের। এই ভিটে থেকে তাড়াতে আমাদের ওপর আঘাত করা হয়েছে। আমার স্বামীর মা, ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী মিলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে ভিটেমাটি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন আমাদের। নিরুপায় হয়ে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি আমি ও আমার ছেলে।’ তার অভিযোগ, চলতি বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি এ ঘটনার পর তিনি দক্ষিণ সুরমা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ সেই অভিযোগের সঠিক তদন্ত করছে না। তদন্ত কর্মকর্তা ‘নির্যাতনকারী ও দখলবাজ চক্রের’ সঙ্গে ‘হাত মিলিয়েছেন’। সেজনা বলেন, ‘আইনি সহযোগিতা নিয়ে জীবনের স্বাভাবিক নিরাপত্তাসহ ভিটেমাটি ফেরত পাওয়ার প্রত্যাশায় অভিযোগ দিয়েছিলাম পুলিশে। আইনের রক্ষকদের রহস্যজনক নীরবতায় অভিযোগ দেওয়ায় হিতে বিপরীত হয়ে উঠছে আমাদের জীবন। আমাদের মতো অসহায়রা এখন কোথায় যাবে?’ এ প্রসঙ্গে দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি আখতার হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর