বুধবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
রায়হান হত্যা

রিমান্ড শেষে এসআই আকবর কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমদ হত্যার ঘটনার মামলায় প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। সাত দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল দুপুরে তাকে সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবুল কাশেমের আদালতে হাজির করা হয়। পরে আদালত আকবরকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেয়। এদিকে, আদালতে আকবরের পুনরায় রিমান্ড বা জবানবন্দি দেওয়ার আবেদন পিবিআই না জানানোয় রায়হানের চাচা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বিচার      বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। আদালতের এপিপি সৈয়দ শামীম জানান, রিমান্ড শেষে আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে আদালতে হাজির করে পিবিআই। তাদের পক্ষ থেকে আকবরের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের প্রার্থনা কিংবা নতুন করে রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়নি। ফলে আদালত আকবরকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। তিনি জানান, আদালতে আকবরের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। তিনি নিজেই তার জামিন আবেদন জানালে বিচারক তা নামঞ্জুর করেন।

সৈয়দ শামীম জানিয়েছেন, সাত দিনের রিমান্ডে আকবরের কাছ থেকে কী কী তথ্য পাওয়া গেছে, তার একটি লিখিত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছে পিবিআই।

এদিকে, পিবিআই আকবরের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির আবেদন বা পুনরায় রিমান্ডের আবেদন না করায় রায়হান আহমদের চাচা মাইনুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘তদন্ত কর্মকর্তা আবেদন না করলে আদালতের কী করার! আমরা বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি।’

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খালেদ-উজ-জামান বলেন, ‘আকবরের কাছ থেকে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে, তা আমরা যাচাইবাছাই করব। প্রয়োজন হলে আবার রিমান্ড আবেদন চাওয়া হবে।

এর আগে গত ১০ অক্টোবর রাতে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে ধরে নেওয়া হয় নগরীর নেহারীপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে রায়হান আহমদকে। পরদিন সকালে গুরুতর অবস্থায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন ফাঁড়ির এএসআই আশেকে এলাহী। প্রথমে ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে রায়হান মারা গেছে বলে দাবি করে পুলিশ। পরে তার পরিবারের পক্ষ থেকে ফাঁড়িতে নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ তোলা হলে মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পেয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিন সদস্যকে প্রত্যাহার করে। রায়হানের স্ত্রীও হত্যা এবং হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে থানায় মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পরপরই গা ঢাকা দেন এসআই আকবর। দীর্ঘ ২৯ দিন পর গত ৯ নভেম্বর ভারতে পালানোর সময় সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন আদালতে হাজির করে তার সাত দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত তা মঞ্জুর করে।

এদিকে, রায়হানের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগ আনা শেখ সাইদুর রহমানকে প্রতারণার মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ১৫ নভেম্বর তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পিবিআই। পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে রায়হান হত্যা মামলাটির তদন্ত করছে পিবিআই।

সর্বশেষ খবর