বুধবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

পাঁচ বছর পর রায়, ছাত্রী পেল স্বপ্নের স্কুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির কারণে ভর্তিবঞ্চিত হয়েছিল এক উকিলের মেয়ে। অন্যদিকে ভুল উত্তর দিয়েও পূর্ণ নম্বর পেয়ে ৮ ছাত্রী ভর্তির সুযোগ পেয়ে যায়। বরিশাল জেলা জজ আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এস এম আবদুল্লাহ মেয়ের অধিকার প্রতিষ্ঠায় মামলা ঠুকে দেন আদালতে। ২০১৫ সালের এ ঘটনায় মামলার পাঁচ বছর পর গত ২ অক্টোবর বরিশাল সদর  সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বিচারক কাজী কামরুল ইসলাম ভর্তিবঞ্চিত আইনজীবীকন্যা সৈয়দা তাসনিয়া বিনতে আবদুল্লাহকে বর্তমানে যে শ্রেণিতে অধ্যায়নরত সেই শ্রেণিতে আগের কাক্সিক্ষত স্কুলে ভর্তি করার নির্দেশ দেন। সৈয়দা তাছনিয়া বর্তমানে সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছে। গতকাল এ রায়ের সার্টিফায়েড কপি হাতে পান মামলার বাদী। অ্যাডভোকেট এস এম আবদুল্লাহ বরিশাল সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ২০১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এক মামলায় অভিযোগ করেন, তার মেয়ে সৈয়দা তাছনিয়া বিনতে আবদুল্লাহ ২০১৫ সালে সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষায় প্রভাতী শাখায় উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও তাকে অনুত্তীর্ণ দেখানো হয়। কয়েকজন ভর্তি পরীক্ষার্র্র্র্র্র্র্থী বাদীর মেয়ের চেয়ে কম নম্বর পাওয়ার পরও কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের উত্তীর্ণ দেখায়।

মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রভাতী শাখার উত্তীর্ণ ১১৪টি প্রশ্ন ও উত্তরপত্র তলব করেন।

পরে আদালত উত্তরপত্রগুলো পর্যালোচনা করে দেখতে পান, বাদীর মেয়ের প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৩৮.৭৫। ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৮ জন ছাত্রীকে প্রশ্নপত্রের ১৯ নম্বর প্রশ্নের উত্তর ভুল দেওয়ার পরও ওই প্রশ্নের বিপরীতে পূর্ণ মান ৪ নম্বর করে দেওয়া হয়। উপরোক্ত ৮ পরীক্ষার্থী ৪ নম্বর করে কম পেলে তাদের প্রাপ্ত নম্বর বাদীর মেয়ের চেয়ে কম হয়। এরপরও বাদীর মেয়ে সৈয়দা তাসনিয়াকে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি থেকে বঞ্চিত করা হয়। রায়ে সৈয়দা তাসনিয়াকে ২০১৫ সালে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির প্রভাতী শাখার ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ঘোষণা করে আদালত। একই সঙ্গে সৈয়দা তাসনিয়া বর্তমানে যে শ্রেণিতে অধ্যায়নরত তাকে সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সেই শ্রেণিতে (অষ্টম) ভর্তি করার জন্য ভর্তি কমিটিকে নির্দেশ দেয় আদালত।

সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভর্তি কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক, ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব ও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ভর্তি কমিটির সদস্য সরকারি বিএম কলেজের অধ্যক্ষ, বরিশালের সিভিল সার্জন এবং শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলীকে আদালতের এ আদেশ বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বাদী অ্যাডভোকেট এস এম আবদুল্লাহ বলেন, দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর ন্যায়বিচার পেয়েছি। ভর্তি অনিয়মের কারণে আর কোনো শিক্ষার্থীর চোখে যেন অশ্রু না ঝরে।

 

সর্বশেষ খবর