বুধবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড

আকাশপথে দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ বাড়ল

নিজস্ব প্রতিবেদক

ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড

ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) বিল-২০২০’ পাস হয়েছে। এর ফলে এ বিষয়ে সরকারের জারি করা ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২০’ আইনে পরিণত হলো।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল সংসদের বিশেষ অধিবেশনে বিলটি পাস হয়। বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বেগম ফজিলাতুন নেসা। এর আগে বিলের ওপর আনীত সংশোধনী, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাবগুলো নাকচ হয়ে যায়।

২০০০ সালের ৮ নম্বর আইন (নারী ও শিশু নির্যাতন দমন) সংশোধন করে সরকারের জারি করা অধ্যাদেশের আলোকে সংসদে উত্থাপিত বিলে বলা হয়েছে, ‘যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড’ শব্দগুলোর পরিবর্তে ‘মৃত্যুদন্ডের বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ-’ শব্দগুলো প্রতিস্থাপিত হবে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নারী ও শিশু ধর্ষণ জঘন্য অপরাধ। নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ কঠোরভাবে দমনের উদ্দেশ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু দেশে নারী ও শিশু ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের ঘটনা সামাজিক গতিশীলতায় নেতিবাচক প্রভাব ও উন্নয়নের ধারা বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তাই এমন অপরাধ দমনে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এ অবস্থায় আইনে সর্বোচ্চ দন্ডের বিধান যুক্ত করতে এ বিলটি আনা হয়েছে।

এদিকে আকাশপথে পরিবহনের সময় দুর্ঘটনায় যাত্রী আহত বা নিহত হলে এবং ব্যাগেজ নষ্ট বা হারিয়ে গেলে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়াতে জাতীয় সংসদে আইন পাস হয়েছে। এক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ               প্রায় ছয়গুণ বেড়েছে। বিদ্যমান বিধানে আকাশপথে পরিবহনের সময় যাত্রীর মৃত্যু বা আঘাতপ্রাপ্ত হলে ক্ষতিপূরণ ছিল ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৬০০ টাকা। নতুন আইনে সেটা বেড়ে ১ কোটি ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৩৩৪ টাকা হচ্ছে।

গতকাল সংসদে এ সংক্রান্ত ‘আকাশপথে পরিবহন (মন্ট্রিল কনভেনশন) বিল-২০২০’ বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।

গত মার্চ মাসের আগে বিমানের টিকিট ব্লক করা হতো বলে স্বীকার করেছেন বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী। গতকাল জাতীয় সংসদে তিনি বলেছেন, এর আগে আমরা বিভিন্ন অভিযোগ পেতাম, ‘বিমানের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না, অথচ বিমান ফাঁকা যাচ্ছে।’ এমন অভিযোগের ভিত্তিতে এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা এটি তদন্ত করেছি। মনিটরিং করেছি।

এটি অসত্য ছিল না, কোন কোন অসৎ কর্মী টিকিট ব্লক করে রাখত।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটি আমরা একটেনসিভ স্টাডি করেছি, তার পরে আমরা সার্ভিস সেন্টারগুলো তদন্ত করে দেখেছি কিছু কিছু সেন্টারে টিকিট ব্লক করা হতো। আমরা এর সঙ্গে যারা জড়িত তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করেছি। এবং সব টিকিট যাতে ওপেন থাকে তার ব্যবস্থা নিয়েছি। এর পরে এ বছরের মার্চ মাস থেকে বিমানের কোনো টিকিট ব্লক করার কোনো উপায় নেই। এমনকি মন্ত্রীর জন্য বা ভিআইপিদের জন্যও কোনো টিকিট ব্লক করার কোনো উপায় নেই। সে জন্য মার্চ মাস থেকে বিমানের সব সিটে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। বিমান ভর্তি হয়ে যাচ্ছে।

বিমান পরিবহন বা মন্ট্রিল কনভেনশন বিল পাসের সময় সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম, পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, মোশারফ হোসেনসহ জাতীয় পার্টির এমপিদের এ ধরনের একটি প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা স্বীকার করে এ মন্তব্য করেন।

বিএনপির হারুন আর রশীদের আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমানে শাহজালাল বিমানবন্দরের অবস্থা আমূল পরিবর্তন হয়েছে। বিমানবন্দরে কোনো যাত্রী হয়রানি ঘটে না আর লাগেজ নিয়ে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে না। বিশ্বের অন্য বিমানবন্দরে এক-দেড় ঘণ্টা পরে লাগেজ পাওয়া গেলেও আমাদের বিমানবন্দরে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিটের মধ্যে লাগেজ হাতে পাওয়া যায়। তিনি বলেন, বিশে^র বিভিন্ন দেশের যাত্রীরা আগে নামেন বিমানবন্দরে, সেখান থেকে দেশের প্রতি তারা যেন একটা ভালো ধারণা-মনোভাব নিয়ে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন সে জন্য বিমানবন্দরগুলোকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। আমরা তৃতীয় টার্মিনাল করছি। এর ফলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বিমানবন্দরের চিত্র একেবারে নান্দনিক হবে বলে জানান তিনি। তবে তিনি বলেন, মন্ত্রী এমপিদের জন্য টিকিট আপডেটের কোনো নিয়ম বিমানে নেই, যে যেখানে সিট পাবেন সেখানে বসে তাকে যেতে হবে। ‘আমি প্রতিমন্ত্রী হয়েও তৃতীয় শ্রেণিতে বিমান ভ্রমণ করেছি’ বলে জানান মাহবুব আলী।

সর্বশেষ খবর