শুক্রবার, ২০ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ব্লিচিং পাউডার নাম দিয়ে কফি ওষুধ আমদানি

বেনাপোলে ১৫ দিনে ৫ কোটি টাকার পণ্য আটক

বকুল মাহবুব, বেনাপোল

দেশের স্থলবন্দর বেনাপোলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ১৫ দিনে রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে ৫ কোটি টাকার পণ্য চালান আটক করেছে। এ বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে বছরে ৩৫ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বেনাপোল কাস্টমস হাউসের জন্য চলতি অর্থবছরে ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। একটি অসাধু চক্র রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে ৭টি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট লাইসেন্স বাতিল করেছে। চকলেটের চালানে উন্নতমানের শাড়ি, ব্লিচিং পাউডারের চালানে কফি ও ওষুধ, মেশিনারি পার্টসের ভিতরে প্যাডলক ও রেক্সিন, আমদানিকৃত ঘোষণা-অতিরিক্ত ১৯ টন মাছ আটক করা হয়। এসব চালান থেকে ২ কোটি ২০ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। জব্দ পণ্যগুলো বাজেয়াপ্ত করে নিলামের প্রক্রিয়া শুরু করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে রাজস্ব        ফাঁকি রোধে ঝটিকা অভিযানও শুরু করেছে। পরিচ্ছন্ন ব্যবসায়ীরা চান এসব রাজস্ব ফাঁকিবাজের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা। রাজস্ব ফাঁকির ঘটনায় যে ৭টি সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্স বাতিল হয়েছে সেগুলো হলো- রিমু এন্টারপ্রাইজ, তালুকদার এন্টারপ্রাইজ, এশিয়া এন্টারপ্রাইজ, সানি ইন্টারন্যাশনাল, মদিনা এন্টারপ্রাইজ (ভাড়ায় খাটানো হয়), মুক্তি এন্টারপ্রাইজ, রিয়াংকা এন্টারপ্রাইজ।

সবচেয়ে বড় ধরনের রাজস্ব ফাঁকির ঘটনা ঘটায় বেনাপোলের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান রিড এন্টারপ্রাইজ। তারা ৪ হাজার ৬৭৫ কেজি ব্লিচিং পাউডার ঘোষণা দিয়ে বস্তার মধ্যে কফি, ওষুধ জাতীয় পণ্য আমদানি করে। যার মেনিফেস্ট নম্বর হলো ২৭৫৭৮/১। বিল অব এন্ট্রি নম্বর সি-৫৪৫২৫। প্রতিষ্ঠানটির সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট বেনাপোলের রিয়াংকা ইন্টারন্যাশনাল।

রিয়াংকার ঘোষণার অতিরিক্ত ৩৬০ কেজি কফি ও ১ হাজার ৯২৭ কেজি ওষুধ জাতীয় পণ্য আটক করা হয়। এ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের মূল মালিক রতনকৃষ্ণ হালদার। এদিকে বন্দরে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি বেড়েই চলেছে। কখনো কাস্টমস-বন্দরকে ম্যানেজ করে আবার কখনো বিভিন্ন পরিচয়ে হুমকি-ধমকি দিয়ে চলছে সরকারের রাজস্ব ফাঁকির উৎসব। মাঝেমধ্যে দু-একটি চালান আটক হলেও অধিকাংশই থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, শুল্ক ফাঁকি দুঃখজনক। এসব ঘটনায় প্রকৃত ব্যবসায়ীদের সুনাম ক্ষুণœ হচ্ছে।

সাধারণ ব্যবসায়ীদের হয়রানি বেড়ে যাচ্ছে। বেনাপোল কাস্টমসের কমিশনার মো. আজিজুর রহমান বলেন, ‘রাজস্ব ফাঁকি রোধে আমরা জিরো টলারেন্স ভূমিকা গ্রহণ করেছি। বন্দরে রাতে কাস্টমসের একাধিক মোবাইল টিম কাজ করছে। আমরা অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে তৎপর।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর